কাঁদতেও পারেননি আবরার
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেরিয়ে আসছে একের পর এক লোমহর্ষক তথ্য। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এক খুনি জানিয়েছে, রোববার রাতে আবরারকে মারতে মারতে আস্ত একটা ক্রিকেট স্টাম্প ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু সবাই মিলে আবরারের মুখ চেপে ধরায় সে কাঁদতেও পারেনি।
আবরারের বন্ধুরা জানাচ্ছেন, আবরার থাকতেন শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে। ঘটনার দিন রোববার বিকেলে পলাশী থেকে চা নাস্তা খেয়ে রুমে যান আবরার। এরপর সাড়ে ৭টার দিকে তাকে ডেকে পাঠান বড় ভাইয়েরা। কয়েকজন এসে তাকে ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে যান। এরপর সেখানে আবরারের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও মেসেঞ্জার পরীক্ষা করা হয়। এরপর তার সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই স্ট্যাটাস নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতারা। কয়েক ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে চলে নির্যাতন। রাত ১০ টার দিকে আবরারের কাপড় নিয়ে যান তারা। আবরারের এক রুমমেট জানান, এই কাপড় নিয়ে যাওয়া থেকে তারা ধারণা করেন যে রক্তাক্ত হয়েছে আবরার। কিন্তু ছাত্রলীগের বড় ভাইদের ভয়ে তারা তখন কিছুই করতে পারেননি।
সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা যায়, আবরারকে তার কক্ষ থেকে রোববার দিবাগত রাত ৮টা ১৩ মিনিটে দ্বিতীয় বর্ষের ৫ জন এসে ডেকে নিয়ে যায় দোতলায়। তারা আবরারকে নিয়ে যাওয়ার সময় হেলমেট হাতে একজন আসে সেখানে। আবরার দোতলায় উঠে যায় অন্যদের সঙ্গে। পরে রাত দেড়টায় আবরারকে মারধরের পর কক্ষ থেকে বের করা হয়। প্রথমে একজনকে বারান্দা দিয়ে কিছুটা দৌড়ে এসে দাঁড়াতে দেখা যায়। এরপর তিনি একই পথে ফিরে যান। কিছুক্ষণ পর আবরারকে তিনজন ধরাধরি করে নিয়ে আসেন। তাদের পেছনে একজনকে হেঁটে আসতে দেখা যায়, তার পেছনে আরেকজন হেঁটে আসেন। এর পরপরই আরও পাঁচজন ওই বারান্দা দিয়ে হেঁটে আসেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি সূত্র বলছে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা যে তথ্য দিচ্ছে তাতে আবরার হত্যায় জড়িত মোট ২২ জন। তবে হত্যার ঘটনায় যে মামলা হয়েছে তাতে ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। জড়িত সবাইকেই আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ০৯,২০১৯)