তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গাসহ নিহত ৪
জেলা প্রতিনিধি: তিন জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গাসহ চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ও শুক্রবার ভোররাতে ময়মনসিংহ, কক্সবাজার ও জয়পুরহাটে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহতরা ডাকাতি, মাদক ও অপহরণে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আব্দুল মোতালেব (৪২) নামে পাঁচটি ডাকাতি মামলার আসামি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গফরগাঁও-রসুলপুর আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল মোতালেব গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুরের ছয়ানী গ্রামের কেতু শেখ ওরফে আব্দুল গফুরের ছেলে।
ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, রাতে গফরগাঁও-রসুলপুর আঞ্চলিক সড়কে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে ডাকাতদল- এমন খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের দুটি দল সেখানে অভিযান চালায়। ডাকাতদল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। সহযোগী ডাকাতদল পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মোতালেব নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, আহত মোতালেবকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মোতালেবের বিরুদ্ধে পাঁচটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
কক্সবাজার : কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল নাফ নদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের ব্লক-এ/৩ এর সোলতান আহমেদের ছেলে আবুল হাসিম (২৫) ও ব্লক-সি/১ এর আবু ছিদ্দিকের ছেলে নূর কামাল (১৯)।
বিজিবির দাবি- নিহতরা ইয়াবা কারবারি। এ সময় বিজিবির তিন সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি এলজি অস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি এবং দুটি লম্বা দা উদ্ধার হয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবির কমান্ডার লে. কর্নেল ফয়সাল হাসান খান বলেন, হোয়াইক্যং বিওপির সদস্যরা বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে নাফ নদের কিনারায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় একটি নৌকায় করে কিছু লোক বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে। বিজিবি সদস্যরা ওঁৎ পেতে থাকেন। দুজন লোক কূলে নামামাত্র বিজিবি সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা তীর দিয়ে দৌড় দেন। নৌকায় থাকা লোকজন নৌকাটি নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা বিজিবি সদস্যদের ওপর গুলি বর্ষণ করে। তাদের দেখাদেখি নৌকায় থাকারাও গুলি চালায়। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।
উভয়পক্ষের গোলাগুলি শেষে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। তাদের পকেটে থাকা পরিচয়পত্রে তারা রোহিঙ্গা বলে শনাক্ত হয়। এ ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্যও আহত হন। তারা টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিজিবি কমান্ডার আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় তৈরি একটি এলজি, দুই রাউন্ড গুলি, দুটি রাম দা ও ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ভুতগাড়ী গ্রামে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আমিনুল ইসলাম ক্যাসেট (৩৫) নামে এক শীর্ষ অপহরণকারী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে ।
নিহত আমিনুল ইসলাম ক্যাসেট জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পিয়ারা গ্রামের মৃত শাহাবুল ইসলামের ছেলে।
পাঁচবিবি থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর রহমান বলেন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক কারবার, ছিনতাইসহ প্রায় এক ডজন মামলার পলাতক আসামি ছিলেন নিহত আমিনুল ইসলাম ক্যাসেট। শুক্রবার রাতে একই উপজেলার ভুতগাড়ী গ্রামে ক্যাসেটসহ তার দলবল নতুন করে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে একত্রিত হচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও ক্যাসেট গুলিবিব্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ১৮,২০১৯)