দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ জোর করে সরকারে থাকার দল নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘জনগণের চাহিদার বাইরে ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছে আমাদের নেই। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ। জনগণের ইচ্ছায় আওয়ামী লীগ সরকারে আছে এবং দেশ পরিচালনা করছে।’

শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পুলিশ আওয়ামী লীগকে সরকারে রাখে নাই, জনগণের সমর্থনে এবং ইচ্ছায় আমরা দেশ চালাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শুদ্ধি অভিযান কে, কীভাবে নিচ্ছেন, কার স্বার্থে আঘাত লাগছে জানি না, তবে দেশে-বিদেশে তা ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছে। খারাপ লোকজন দলে দরকার নেই। যারা সন্ত্রাস চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ তাদের দরকার নেই। যারা মাস্তান তারাই অনুপ্রবেশকারী। যাদের ভোগের ইচ্ছে আছে, তাদের দরকার নেই। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে, তা না করলে নিবার্চন এলে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে শাস্তি দিয়ে দেবে। শিশু যেমন মা ছাড়া বাঁচতে পারে না। আওয়ামী লীগ মানুষ ছাড়া বাঁচতে পারবে না। কাজেই সবাই সতর্ক থাকবেন। জনগণকে কষ্ট দেবেন না। উন্নয়নের সঙ্গে আচরণ ভালো না হলে এই উন্নয়নের কোনও লাভ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি আর কিছু না পারুক তারা ষড়যন্ত্রে ওস্তাদ। কিন্তু জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই। নেতিবাচক রাজনীতির কারণে বিএনপি জনগণের সাড়াও পাচ্ছে না। এজন্যই তারা কোনও কর্মসূচিতে সমর্থন পায় না।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আমলে একটি অপকর্মেরও সাজা হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। মির্জা ফখরুল বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু তারা একটি অপকর্মেরও শাস্তি দিতে পারেননি। শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে। অপকর্ম করলে শাস্তি পেতেই হবে। আওয়ামী লীগ বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নুসরাত হত্যাকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মির্জা ফখরুল আবোল-তাবোল বকছেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের লোক যে সাজা পেলো তার প্রশংসা করছেন না। সবকিছুতেই তারা নেতিবাচক রাজনীতি খুঁজে।'

তিনি বলেন, ‘নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে হবে নতুন কমিটি। নতুন মুখ আসবে। এক্সপেরিয়েন্স ও এনার্জির সমন্বয় হবে। সরকারের সহযোগিতার জন্য শক্তিশালী দল দরকার। দল দুর্বল হয়ে গেলে সরকারও দুর্বল হয়ে পড়বে।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শিডিউল অনুযায়ী দলের সম্মেলন চূড়ান্ত করা হবে। এবারের নির্বাচন খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ, প্রতিপক্ষ আটঘাট বেঁধে নামবে। খেয়াল রাখবেন বিদ্রোহী প্রার্থী যেন না থাকে। কেননা, নিজেরা নিজেরা ঝগড়া করলে সুযোগ নেবে প্রতিপক্ষ।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে কিছু বলতে পারছেন না জানিয়ে কাদের বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কোনও অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে তাকে কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটা নেত্রীর নির্দেশ। সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি সম্মেলনের কাজ করবে।’

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ২৫,২০১৯)