৯ মাসের শিশুর রিট হাইকোর্টে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, শপিংমল এবং কর্মস্থলে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার নিরাপদ পরিবেশ সম্বলিত ব্রেস্ট ফিডিং ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজজামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। শিশুটির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। শিশুটির মা অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
এর আগে গত মঙ্গলবার নিরাপদে মায়ের বুকের দুধ পানের পরিবেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে ৯ মাস বয়সের ছোট্ট শিশু উমাইর বিন সাদী। শিশুটি অবুঝ হওয়ার তার পক্ষে রিট আবেদনের বাদি হয়েছেন শিশুটির মা।
জানা যায়, উমাইর মায়ের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে বেড়ানো শেষে ঢাকায় ফেরার পথে কক্সবাজার বিমানবন্দরে হাজির হয়। কিন্তু সেখানেই বিপদে পড়ে সে। প্রচণ্ড ক্ষিধায় কান্না জুড়ে দেয়। শিশুটির কান্না থামাতে মা বুকের দুধ খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। কিন্তু তার মা এই ছেলে শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর কোনো পরিবেশই পাচ্ছিলেন না। শিশুটির কান্না বেড়েই যাচ্ছিল। এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করেও শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে পারছিলেন না অসহায় মা। শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরে নারী যাত্রীদের চেকিং-এ দায়িত্বরত এক কর্মীকে রাজি করিয়ে সেখানে দুধ খাওয়ানো হয় শিশুটিকে। দুধ খাওয়ার পর শিশুটির কান্না থামে।
শিশুটির মা-ও একজন আইনজীবী। বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ নম্বর অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই রিট আবেদন করা হয়েছিল। রিট আবেদন করার আগে হাইকোর্টের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে বলে জানান তিনি। ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ রিট আবদেন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কমবয়সী মানুষের রিট আবেদন করার ঘটনা এই প্রথম। রিট আবেদনে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, বিমান ও পর্যটন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি কর্মস্থলে ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু মাতৃ দুগ্ধদান কক্ষ স্থাপন করার নির্দেশনা আজও কার্যকর হয়নি। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বীমা-ব্যাংক, শপিং মল, কল-কারখানা, পেশাজীবী সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেও এক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে কর্মজীবী মায়েদের জন্য নেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ২৭,২০১৯)