ঘুষের টাকাসহ মহেশখালীতে কানুনগো গ্রেফতার
কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের মহেশখালী ভূমি অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক) একটি দল। এ সময় ঘুষের নগদ প্রায় আড়াই লাখ টাকাসহ ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কানুনগো আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে দুদক দল। এ ঘটনায় ফাঁদ মামলা করেছে দুদক।
সোমবার বিকালে দুদকের একজন উপপরিচালকের নেতৃত্বে দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের একটি দল এ অভিযান চালায়। এ অভিযান সমাপ্ত হয় রাত ৯টার দিকে।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপপরিচালক মাহবুবুল আলম জানান, মহেশখালী ভূমি অফিসে অব্যাহত ঘুষ-দুর্নীতির আগাম তথ্য ছিল দুদকের কাছে।
উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা যুবক সেকান্দর বাদশা একজন প্রতিবন্ধী ও অতিদরিদ্র ব্যক্তি। একজন ভূমিহীন ব্যক্তি হিসেবে সরকারের কাছ থেকে তিনি এক খণ্ড জমি পেয়েছিলেন।
ওই জমির নামজারি ও জমাভাগ খতিয়ান খোলার জন্য তিনি বেশ কয়েক দিন আগে ভূমি অফিসে যান। এ সময় নামজারির জন্য তার কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের ঘুষের টাকা দাবি করে ভূমি অফিসের লোকজন।
অনেক চেষ্টা করেও তিনি কম টাকার ভেতরে রাজি করাতে পারছিল না ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কানুনগো আবদুর রহমানকে। শেষ পর্যন্ত দরিদ্র যুবক সেকান্দর বাদশা ২০ হাজার দিয়ে নামজারিটি সম্পন্ন করার জন্য রাজি করাতে সম্মত হন। ইতোমধ্যে এমন হয়রানির বিষয়টি তিনি দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়কে অবগত করেন।
পরে এ তথ্যের সূত্র ধরে মহেশখালী ভূমি অফিসে অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয় দুদক।
দুদকের এ কর্মকর্তা জানান, এখানে অভিযান পরিচালনার জন্য দুদক চেয়ারম্যানের অনুমোদন চাওয়া হয়, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ভূমি অফিস এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকে দুদকের একটি দল। ইতোমধ্যে ভূমি অফিসে দেয়ার জন্য রাখা সেকান্দর বাদশার ২০ হাজার টাকার নোটে দুদকের পক্ষ থেকে শনাক্তকারী চিহ্নযুক্ত করা হয়।
দিনের প্রথম ভাগ পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন কানুনগো আবদুর রহমান। সেকান্দর বাদশার কাছ থেকে টাকা নেয়ার সময়ও হচ্ছিল না তার।
দুপুরের পর ঘুষের ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তিনি। এ সময় ছদ্মবেশ পরিহার করে দ্রুত অভিযান চালায় দুদক দল। অভিযানের সময় তার বসার চেয়ারের পাশের ড্রয়ারে এ ২০ হাজার টাকাসহ বিভিন্নজন থেকে গ্রহণ করা ঘুষের প্রায় আড়াই লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে দণ্ডবিধি ১৬১ সহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫-এর ২ ধারায় ফাঁদ মামলা হয়েছে।
দুদক জানায়, অভিযানে দুদকের ৯ সদস্যের একটি দল অংশগ্রহণ করে। একজন উপপরিচালকের নেতৃত্বে অভিযানে অংশগ্রহণ করেন দুই সহকারী পরিচালক, তিন উপসহকারী পরিচালক, দুই কনস্টেবল ও এক চালক।
গ্রেফতার কানুনগো আবদুর রহমানকে রাতেই মহেশখালী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
রাতে মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, দুদকের মামলার এ আসামিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ২৯,২০১৯)