২য় দিনের রিমান্ডে জি কে শামীম
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জি কে বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী কথিত যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে দ্বিতীয় দিনের মতো রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতে দুদকের ডাক্তার ডা. অনুপ কুমার বিশ্বাস জি কে শামীমের শারীরিক অবস্থা চেকআপ করেন। ডাক্তারের চেকআপে তার শারীরিক অবস্থার স্বাভাবিক রিপোর্ট পাওয়া যায়।
এর আগে গতকাল রোববার বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে রমনা থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল।
সাত দিনের রিমান্ডের আজ দ্বিতীয় দিন জিজ্ঞাসাবাদ করছে সংস্থাটি।
গত ২১ অক্টোবর শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি আট লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
মামলার পরপরই অন্য মামলায় কারাগারে থাকা শামীম ও খালেদকে নিজেদের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে দুদক। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তা মঞ্জুর করেন। পরে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে যান দুদক কর্মকর্তারা। শুনানি শেষে আদালত তাদের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুদকের মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শামীম ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
এছাড়া শামীমের বাসা থেকে উদ্ধারকৃত নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও সাত লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা, শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরো ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার এবং জি কে বি এন্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
দুদকের অনুসন্ধানে জি কে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের কোনো বৈধ আয়ের উৎসও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ মোট ২৯৭ কোটি আট লাখ ৯৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে দায়ে ২৭ (১) ধারা ও দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মা ও ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আরো সম্পদের খোঁজে রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
কথিত যুবলীগ নেতা জি কে শামীম নিজের পরিচয় দিতেন যুবলীগের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। আবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দিতেন। চলতেন ছয়জন সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের বড় কাজের প্রায় সবই ছিল তাঁর প্রতিষ্ঠানের কবজায়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। ওই দিন তার কার্যালয় থেকে নগদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজপত্র, নয় হাজার মার্কিন ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার, একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং মদের বোতল জব্দ করা হয়।
আটকের পর শামীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়। এসব মামলা তদন্ত করছে পুলিশ ও র্যাব।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ০৪,২০১৯)