একটি বগির একজন লোকও বাঁচেনি!
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রীদের বর্ণনায় উঠে আসছে ঘটনার ভয়াবহ চিত্র। জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের একটি বগি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, সেটার একজন যাত্রীও বেঁচে নেই। আসিফ শান্ত নুর নামের এক যাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন-
‘আমার মনে হয় বাংলাদেশে এটাই সবচাইতে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা। বেশ খারাপ লাগছে নিহতদের ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে। আনুমানিক ৩টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ৭৪১ তূর্ণা এক্সপ্রেস ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ৭২৪ উদয়ন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় মন্দবাগ স্টেশন এলাকায়। এমন দুর্ঘটনার খবর আমি আমার জীবনে শুনতে পাইনি এবং দেখিনি। বিশেষ করে মনে হচ্ছে কোনো টিভির হেডলাইন ও পত্র-পত্রিকায়ও দেখিনি। নিথর দেহগুলো পড়ে আছে।
তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি মাত্র কুমিল্লা ছেড়ে কিছু দূর গেল। মধ্যরাতে ট্রেনটা মোটামুটি অনেক গতিতেই চলছিল। ট্রেনটি যে লাইনে চলছিল অপর ট্রেনটির শেষ কয়েকটা বগি তখনও তূর্ণা এক্সপ্রেসের লাইন ক্রস করে পুরোপুরি বিপরীত লাইনে যেতে পারেনি। এ কারণে অনেক বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয় এবং সেই ধাক্কায় ট্রেনটি লাইনে ঠিক থাকতে পারলেও উদয়ন এক্সপ্রেস তার লাইনে থাকতে পারেনি এবং ওই ট্রেনের শেষদিকের সবকটি বগি উল্টে যায়।
বেশ কয়েকজন যাত্রী মুহূর্তের মধ্যে খেয়াল করে দেখলো— এক্সিডেন্ট হওয়া বগির যত যাত্রী ছিলো তাদের গুটি কয়েকজন ছাড়া সবাই মৃতপ্রায়! আবার আরেকটি বগির একজন লোকও বাঁচেনি! প্রথমে একজন মহিলাকে জীবিত দেখলেও ওই মহিলার দুই পা কেটে গেছে। চিৎকার করে শুধু পানি চেয়েছে! এছাড়াও পরে জীবিত বাকি আরো কয়েকজনকে দেখলেও কারো হাত নেই কারো পা নেই— এমন লাশ অনেক পড়ে আছে। যারা বেঁচে আছে তারা শুধু চিৎকার করছে আর কাতরাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোররাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তুর্না নীশিতা ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় যাত্রীবোঝাই এই ট্রেন দুটির সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরও অর্ধশতাধিক যাত্রী।