লবণ নিয়ে হুলুস্থুল!
সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের বাজারে লবণ নিয়ে শুরু হয়েছে হুলস্থুল কাণ্ড। হঠাৎ লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে যে, পেঁয়াজের পর বাড়তে যাচ্ছে লবণের দাম। এমন খবরে দোকানে দোকানে শুরু হয় লবণ নিয়ে কাড়াকাড়ি।
সোমবার রাত ৯টার মধ্যে অনেক দোকানেই লবণের স্টক শেষ হয়ে যায়। আবার অনেকেই বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম সংকট তৈরিও করে ফেলেন।
আবার দোকানে ক্রেতাদের ভীড় থাকায় সুযোগ সন্ধানী অনেক বিক্রেতাই লবণ বাড়তি দরে বিক্রিও করেছেন। শুধু নগরী নয়, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে গ্রামেও। ফলে গ্রামের বাজারেও বাড়তি দরে বিক্রি হয় লবণ।
নগরীর জিন্দাবাজারের নেহার মার্কেটের সামনে কথা হয় ভুট্টো দাসের সাথে। তিনি চার কেজি লবণ নিয়ে ফিরছিলেন। তিনি বললেন, ‘লবণ সংকটের খবরে এক দোকান থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে চার কেজি লবণ কিনেছি। যদিও এ লবণের কেজি ৩৫ টাকা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আম্বরখানার এক দোকানি বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকেই লবণের জন্য ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন।’ তিনি কিছুটা বেশি দামে লবণ বিক্রি করেছেন বলেও স্বীকার করেন।
তবে লবণ সংকটের বিষয়টি পুরোপুরি 'গুজব' বলে জানিয়েছে প্রশাসন। কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই গুজব ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, লবণের কোন সংকট নেই; তাই দাম বাড়ার খবর ভিত্তিহীন।
এদিকে বাজার তদারকি ও লবণের মূল্যরোধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। রাতেই তারা নগরীতে অ্যাকশনে নামেন। এর অংশ হিসেবে নগরীর প্রধান পাইকারী হাট কালিঘাটে বাজার তদারকিতে যায় এক দল।
এসময় এক দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ৫০ বস্তায় ৪৫০ কেজি লবণ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দোকান মালিককে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ডও দেয়া হয়। এছাড়া কালিঘাট থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় আরও এক হাজার কেজি লবণ জব্দ করা হয়েছে।
সিলেট সদর উপজেলার এসিল্যান্ড সুমন্ত ব্যানার্জি জানান, ওই দোকানি প্রতি বস্তায় ২১৬ টাকা বেশি দামে লবণ বিক্রি করছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
অন্যদিকে গুজবকে কেন্দ্র করে জনগণকে বিভ্রান্ত না হতে আহ্বান জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘প্রিয় সিলেটবাসী, বাজারে নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কোন নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে এমন গুজবে কান না দেয়ার জন্য সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. জেদান আল মুসা বলেন, ‘পুলিশ সর্তক অবস্থায় আছে। লবণ নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠিন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি কিংবা অধিক দামে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য রাতেই বিভিন্ন বাজারে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ১৯,২০১৯)