অলরাউন্ডার সৌম্যে প্রথমবার ফাইনালে বাংলাদেশ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ট্রফি জয় না হলেও বেশ কিছু টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশের ছেলেরা। তবে এশিয়া কাপ ইমার্জিং ক্রিকেটের ফাইনালটিই ছিল অধরা। আগের তিন আসরে দুই বার শেষ চারে পৌঁছলেও ফাইনালে জায়গা করে নেয়া হয়নি। চতুর্থ আসরে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেমিতে আজ আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। মিরপুরের শের এ বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ২২৯ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় আফগানিস্তান। সেই লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ওপেনার নাঈম শেখ এবং সৌম্য সরকারের ব্যাটে শুরুটা ভালোই করে বাংলাদেশ।
কিন্তু ইনিংসের চতুর্থ ওভারে নাঈম শেখকে ব্যক্তিগত ১৭ রানে বিদায় করেন আজমতউল্লাহ অমরজাই। সঙ্গী নাঈমকে হারালেও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন সৌম্য। শান্ত এবং সৌম্য মিলে জুটি গড়ে দলকে ১০০ রানের পুঁজি এনে দেন।
একপ্রান্তে শান্ত দেখে শুনে খেললেও খানিকটা আগ্রাসী মনোভাবে ব্যাটিং করে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। তবে ব্যক্তিগত ৬১ রানে লেগ স্পিনার আব্দুল ওয়াসির বলে বোল্ড হন এই ওপেনার। সৌম্য ফিরলেও ইয়াসির আলি রাব্বির সঙ্গে জুটি বেঁধে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। কিন্তু তিনিও হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেনি।
একই বোলারদের বিপক্ষে আউট হওয়ার আগে শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৫৯ রান। এরপর বাকী সময়টা দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ শেষ করে ইয়াসির এবং আফিফ। বল হাতে ৩ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ৬১ রান করে ম্যাচ সেরা হয় অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার।
এর আগে ব্যাটিংয়ের শুরুতেই হাসান মাহমুদের তোপের মুখে পড়ে আফগানিস্তান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তিনি ফেরান আবদুল মালিককে। নবম ওভারে ২৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আফগানিস্তান।
আফগানদের বিপদ আরও বাড়ে মুনির আহমেদ সাজঘরে ফিরলে। সৌম্যর বলে বোল্ড হন তিনি। ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলটি দারউইশ রাসুলি ও সামিউল্লাহ শিনওয়ারির পঞ্চম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। তবে এই জুটিকে বেশি দূর এগোতে দেননি তানভির ইসলাম। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে স্লিপে ইয়াসির আলির হাতে ক্যাচ দেন সামিউল্লাহ।
ষষ্ঠ উইকেটে ৬৭ রান যোগ করে আফগানদের ম্যাচে ফেরার পথ তৈরি করে দেন রাসুলি ও সৈয়দ শাফাক। এর মাঝে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন রাসুলি। এই জুটি ভেঙে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান তানভির। শাফাক ১ চার ও ২ ছয়ে ৬৬ বলে ৩৪ রান করে ক্যাচ দেন সুমন খানের হাতে।
৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও বাংলাদেশের বোলারদের চেপে ধরার সুযোগ দেননি উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া রাসুলি ও আটে নামা তারিক স্ট্যানিকজাই। চড়াও হয়ে মেরেকেটে খেলে ৬১ বলে তারা যোগ করেন গুরুত্বপূর্ণ ৮৬ রান।
ইনিংসের শেষ ওভারে পরপর দুই বলে স্ট্যানিকজাই ও রাসুলিকে ফেরান মিডিয়াম পেসার সৌম্য। স্ট্যানিকজাই ২৭ বলে ৫ চারে ৩৩ রান করে আউট হন। রাসুলি ফেরেন ১১৪ রান করে। ১২৮ বলের ইনিংসে সমান ৭টি করে চার ও ছয় মারেন এই ডানহাতি।
বাংলাদেশের পক্ষে হাসান ৩ উইকেট নেন ৪৮ রানে। সৌম্য সমান সংখ্যক উইকেট পান ৫৮ রানের বিনিময়ে। ৩৩ রানে ২ উইকেট দখল করেন তানভির। এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত বাংলাদেশ। এর আগে ভারতকে হারিয়ে শীর্ষে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করে বাংলাদেশ।
নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে শনিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে এই আসরের স্বাগতিকরা। এখন পর্যন্ত অপরাজিত পাকিস্তান। গতকাল প্রথম সেমিতে ভারতকে মাত্র ৩ রানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে রোহেইল নাজিরের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান ইমার্জিং: ৫০ ওভারে ২২৮/৯ (মালিক ১, শহিদউল্লাহ ৩, শওকত ১৩, রাসুলি ১১৪, মুনির ২, সামিউল্লাহ ১১, শাফক ৩৪, স্ট্যানিকজাই ৩৩, আজমত ১*, ওয়াসি ০; হাসান ৩/৪৮, সুমন ০/৫৯, সৌম্য ৩/৫৮, তানভির ২/৩৩, মেহেদী ০/২৯)।
বাংলাদেশ ইমার্জিং: ৩৯.৫ ওভারে ২২৯/৩ (নাঈম ১৭, সৌম্য ৬১, শান্ত ৫৯, ইয়াসির ৩৮*, আফিফ ৪৫*; জাজাই ০/৩৫, আজমত ১/৪০, শহিদউল্লাহ ০/৩১, মালিক ০/২৯, ওয়াসি ২/৪৬, শিনওয়ারি ০/১৯, স্ট্যানিকজাই ০/২৪)।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ২১,২০১৯)