রায়ে সন্তুষ্ট এমপি লিটনের পরিবার
গাইবান্ধা প্রতিনিধি: বহুল আলোচিত গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল কাদের খানসহ সাতজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক এমপি আবদুল কাদের খান, তার ভাতিজা মেহেদি, পিএস শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক আব্দুল হান্নান, ডিস ব্যবস্যায়ী শাহিন, রানা ও চন্দন কুমার রায়। এদের মধ্যে চন্দন কুমার ভারতে পলাতক রয়েছেন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত লিটনের পরিবারসহ দলের নেতাকর্মী ও গাইবান্ধার সর্বস্তরের জনগণ।
দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে মামলার বাদী এমপি লিটনের স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি বলেন, আমি আমার স্বামীকে শারিরীকভাবে কখনও ফিরে পাব না কিন্তু তিনি মানসিকভাবে আমার সঙ্গে আছেন। আর যেন কাউকে এভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয়, তাই রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এই রায় বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সুন্দরগঞ্জবাসী কলঙ্কমুক্ত হবে।
এমপি লিটনের বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকুলীও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি মামলার পলাতক আসামিকে গ্রেফতার ও দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
রাষ্টপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, এই মামলায় ৫৯ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন গাইবান্ধা-১ আসনের তৎকালীন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুটি মামলা করে পুলিশ। এর মধ্যে একটি অস্ত্র ও অপরটি হত্যা মামলা। অস্ত্র মামলায় একমাত্র আসামি ওই আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
পাশাপাশি হত্যা মামলার তদন্ত শেষে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি কাদের খানসহ আটজনের বিরদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বৃহস্পতিবার হত্যা মামলার রায়ে কাদের খানসহ সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক। মামলার আট নম্বর আসামি কসাই সুবল সম্প্রতি কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান।
২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল প্রথম দফায় আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদী, নিহতের স্ত্রী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ এ পর্যন্ত ৫৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। গত ৩১ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
চলতি বছরের ১৮ ও ১৯ নভেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি শফিকুল ইসলাম শফিক। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ১৮ মাস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ রায় দেন গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ২৮,২০১৯)