বিক্ষোভে উত্তপ্ত দিল্লি-উত্তর প্রদেশ, সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ২৩

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী চলমান বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনি এলাকা বারাণসীতে চলমান বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে আহত হওয়ার পর হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি। সব থেকে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে উত্তর প্রদেশ ও দিল্লিতে। ওই দুই স্থানে শনিবারও সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। রবিবারও (২২ ডিসেম্বর) বড় ধরনের বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
সদ্য পাস হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার রাজধানী দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বড় ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। রাজধানীর রাজঘাটের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, যন্তর-মন্তরেও বড় বিক্ষোভ হবে।
পশ্চিমবঙ্গের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল রবিবার উত্তর প্রদেশ যাচ্ছে। সেখানে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন দিনেশ ত্রিবেদী নেতৃত্বাধীন ওই চার সদস্য। তবে ওই প্রতিনিধি দলকে রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে রবিবার সকালে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও পুলিশপ্রধান ওপি সিংহ। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিজিপি বলেন, ‘তৃণমূল-কংগ্রেসের কিছু নেতা এখানে আসতে চাইছেন বলে জানতে পেরেছি। এই মুহূর্তে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে এখানে। ওই নেতাদের আগমনে উত্তেজনা বাড়তে পারে। তাই তাদের অনুমতি দেওয়া হবে না।’
চলমান বিক্ষোভে সবথেকে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে উত্তর প্রদেশে। এ নিয়ে এই রাজ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে ১৬ জন। এর আগে আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে সহিংসতায় মারা গেছে সাতজন। শনিবার নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনি এলাকা বারাণসীতে পুলিশের লাঠিচার্জের সময় পাশের গলিতে খেলছিল এক শিশু। পাদপিষ্ট হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়।
রাজস্থানের জয়পুরে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ওই প্রতিবাদি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সম্প্রদায়ের লোকের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। অশোক বলেছেন, ‘এটা হবে নীরব ও শান্তিপূর্ণ। কোনও শ্লোগান উচ্চারিত হবে না, প্রদর্শিত হবে না কোনও প্লাকার্ড।’
উত্তেজনা নিরসনে পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন তিনি। বলেন, ‘ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’
বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে অন্তত এক হাজার জনকে। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশেই ৭০৫ জন আটক হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, বিহার, গুজরাট, কেরালা, মেঘালয়সহ বিভিন্ন রাজ্যে নাগরিক আইনের প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ডিসেম্বর ২২,২০১৯)