দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এবং ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিপি নুরুল হক নুর এবং তার সহযোগীদের ওপর হামলার ঘটনায় তাদের রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দার একটি বিশেষ টিম তাদের আটক করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন, দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকিদের ধরার জন্য আমাদের টিম কাজ করছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এ ঘটনায় আহতদের পক্ষে এখনও কোনো মামলা হয়নি। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ভিপি নুরুল হক নুর এবং তার সহযোগীদের ওপর হামলার ঘটনায় এখনও কেউ মামলা করেনি। আমরা কাউকে আটকও করিনি। তবে কেউ যদি মামলা করতে চান তবে মামলা নেওয়া হবে।

এর আগে রোববার দুপুরে ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হক নুরের অফিসে হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় নুরসহ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২৪ জন আহত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করে ডাকসু ভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সেখানে ভিপি নুরসহ তার অনুসারীদের সঙ্গে মঞ্চের নেতাকর্মীদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে মঞ্চের কিছু নেতাকর্মী নুরদের উদ্দেশে ডাকসু ভবনের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। মঞ্চের কিছু নেতাকর্মী ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওপরে উঠতে থাকলে নুরের অনুসারীরা তাদের প্রতিহত করে ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে দেন।

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন ডাকসু ভবনের মূল ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কিছু অনুসারীও ঢুকে পড়েন ডাকসুতে। সনজিত-সাদ্দাম ভিপি নুরের কক্ষে গিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগতদের বের করে দেয়ার নির্দেশনা দেন। কিন্তু এতে ভিপি আপত্তি জানালে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।

এ সময় ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীরা ভিপি নুরের কক্ষে থাকা তার সংগঠন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ নেতাকর্মীদের এক এক করে কক্ষ থেকে বের করে দেন। কক্ষ থেকে বের করে সিঁড়িতে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা তখন তাদের লাঠিপেটা করেন।

এক পর্যায়ে সনজিত ও সাদ্দাম ভিপির কক্ষ থেকে বের হয়ে মধুর ক্যান্টিনের দিকে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে নুরের অফিস কক্ষে ঢুকে লাইট বন্ধ করে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। এতে নুরসহ আহত হন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, রাশেদ খানসহ সংগঠনটির ২৪ নেতাকর্মী। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তাদের বের করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ডিসেম্বর ২৩,২০১৯)