জাপার শীর্ষ নেতা রওশন, ক্ষমতা সব কাদেরের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব অবসানে অবশেষে জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বেগম রওশন এরশাদকে দলের আমৃত্যু প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আজ শুক্রবার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের বৈঠক শেষে মহাসচিব মসিউর রহমান (রাঙ্গা) সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
আগামীকাল জাতীয় পার্টির নবম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার পরিবর্তন প্রসঙ্গে মসিউর রহমান বলেন, ‘এবারের মূল পরিবর্তন হচ্ছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদ চিফ প্যাট্রন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দলে ওনার সম্মান থাকবে সর্বোচ্চ। মিটিং বা সাধারণ সভা- সবখানেই ওনার এই সর্বোচ্চ সম্মানটা থাকবে।’
রাঙ্গা বলেন, ‘এবারের মূল পরিবর্তন হচ্ছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিনী রওশন এরশাদ ‘চিফ প্যাট্রন’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দলে উনার সম্মান থাকবে সর্বোচ্চ। দলের সর্বক্ষেত্রে রওশন এরশাদের অবস্থান দলের চেয়ারম্যানের ঊর্ধ্বে থাকবে, এটা মাননীয় চেয়ারম্যান বলেছেন।’
২০১৬ সালের মার্চে জাতীয় পার্টির অষ্টম কাউন্সিলে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার ভাই জি এম কাদেরের জন্য ‘কো চেয়ারম্যান’ পদ সৃষ্টি করেন। এসময় স্ত্রী রওশন এরশাদ ক্ষিপ্ত হলে তার জন্য সৃষ্টি করেন, ‘সিনিয়র কো চেয়ারম্যান’ পদ। তখন থেকে রওশন এরশাদ এবং জি এম কাদেরের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
অবশেষে বিষয়টি নিয়ে সমাধান পৌঁছেছে দলটি। মসিউর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কাছে দলের সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকবে। যত মিটিং হবে, তা তিনি প্রিসাইড করবেন। তবে যেহেতু হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী এখনো জীবিত, তাই তিনি যত দিন জীবিত রয়েছেন, তিনি চিফ প্যাট্রন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’
জাতীয় পার্টির কোনো সিদ্ধান্ত এখন এককভাবে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে মহাসচিব বলেন, ‘একক সিদ্ধান্তে দল চলে না। এখন থেকে দলের সিদ্ধান্ত এককভাবে কেউ দেবে না। দলের প্রেসিডিয়াম ও দলের কো চেয়ারম্যান যারা আছেন, সবাই মিলে দলের সিদ্ধান্ত দেবেন। চেয়ারম্যানও এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে চান না।’
রওশন এরশাদের নতুন পদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরও বাড়াবে কি না জানতে চাইলে মসিউর বলেন, এটা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। চিফ প্যাট্রন, চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মিলে যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/ক উপধারায় দলের চেয়ারম্যানকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েছে। তবে নবম কাউন্সিলে সেই ধারা বাতিল বা সংশোধন হচ্ছে না বলে জানান জাপা মহাসচিব। পার্টির গঠনতন্ত্রে আরও অনেক ধারায় পরিবর্তন আসতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রেসিডিয়ামের সভায় দলের নেতারা পরিবর্তনের দাবি এনেছেন। চেয়ারম্যানকে পরিবর্তন, সংযোজন, পরিবর্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । এ ছাড়া জানান, জাতীয় পার্টিতে প্রেসিডিয়াম সদস্য সংখ্যা ৪১ রয়েছে। তবে তা কমিয়ে আনা হতে পারে এবং কাউন্সিলে চার-পাঁচ জনকে দলের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান ও কো চেয়ারম্যানের পদে আনা হতে পারে। জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকটি সহযোগী সংগঠন কাউন্সিলে অঙ্গ সংগঠনের স্বীকৃতি পাবে বলেও জানান জাপা মহাসচিব।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ডিসেম্বর ২৭,২০১৯)