দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: টেস্টে বারবার ব্যর্থতার পরেও পরিবর্তন আনতে পারছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। প্রতিবার ইনিংস পরাজয়ে হারের পর টেস্ট দলে বিশাল পরিবর্তন আনার যে ঘোষনা বিসিবি দেয়, তাঁর বাস্তবায়ন যেমন ঘটেনা, তেমনি সেই ব্যর্থ এবং সমালোচিত ক্রিকেটাররাই ঘুরেফিরে জায়গা করে নেয় পরের সিরিজে। যার সবশেষ উদাহরণ আজ ঘোষিত পাকিস্তান সফরের ১৪ জনের বাংলাদেশ স্কোয়াড। 

গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টের পরাজয় যে নাড়িয়ে দিয়েছিল দেশের ক্রিকেটের স্তম্ভ, তারপর পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি। তবে সেই ক্রিকেটারদের নিয়েই ভারত সফরে আবার পরাজয়ের লজ্জায় পরে বাংলাদেশ। দুই টেস্টে ইনিংস পরাজয়ের সাথে বাংলাদেশ কোন টেস্টেই টিকতে পারেনি ৩ দিন!

ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছেন ৪ জন। তারা হলেন- ওপেনার সাদমান ইসমান ইসলাম, ইমরুল কায়েস, অফস্পিনার কাম লেট অর্ডার ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজ ও মিডল অর্ডার কাম অফব্রেক বোলার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। এছাড়া টেস্ট দলে জায়গা ফিরে পেয়েছেন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার আর পেসার রুবেল হোসেন। এর মধ্যে সৌম্য সরকার আফগানিস্তান টেস্টের বাজে পারফরমেন্সের পর ছিটকে গিয়েছিলেন দল থেকে।

সৌম্য সরকার শেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এরপর জাতীয় লিগে ২টি ম্যাচ খেলেছিলেন শেষ মৌসুমে, সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংসসহ করেছিলেন ৮৩ রান। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে ১ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ২৪ রান। তবে সেই সৌম্যই অদ্ভুত আর অজানা কারণে ফের ফিরেছেন টেস্ট স্কোয়াডে।

এছাড়া শান্তর অন্তর্ভুক্তি অবাক করেছে অনেককে। ২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ২০১৮ সালে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন এই বাঁহাতি। এর আগে ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলছেন অভিষেক টেস্ট। দুই টেস্টের চার ইনিংস খেলে শান্তর রান যথাক্রমে ১৮, ১২, ৫, ১৩। অর্থাৎ প্রতি ইনিংসে গড় মাত্র ১২। যদিও এই চার ইনিংসে কখনো খেলেছেন টপ অর্ডারে, কখনো মিডলে।

এছাড়া অন্যতম বিতর্কিত নির্বাচন মোহাম্মদ মিঠুন। মুশফিক না থাকায় মিডল অর্ডারের শক্তি বাড়াতে মিঠুনের অন্তর্ভুক্তি ঘটলেও সাদা পোষাকে বরাবরই ব্যর্থ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ভারতের সাথে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৩, দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮ এবং দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ রান। এরপর তীব্র সমালোচনার মুখে তিন ফরম্যাটের জন্য আলাদা দল নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হলেও হয়নি কার্যকর।

এছাড়া স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন রুবেল হোসেন। সাদা পোষাকে যার ফলাফল কখনোই আশানুরূপ ছিলনা। ২৬ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। গড়প্রতি প্রতি ৮০ রান খরচের পর দেখা পান একটি উইকেটের। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন এই পেসার। এবারের সফরে মুস্তাফিজের বদলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

তবে রুবেল ছাড়া পেস ইউনিটে বাংলাদেশের অন্য অপশন এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি ও আল-আমিন হোসেন। স্বীকৃত স্পিনার হিসেবে তাইজুল ইসলামের সঙ্গী নাঈম হোসেন। মেহেদি মিরাজ না থাকায় একাদশে থাকার তীব্র সম্ভাবনা রয়েছে নাঈমের।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ দল
মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, নাইম হাসান, ইবাদাত হোসেন, আবু জায়েদ রাহী, আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন ও সৌম্য সরকার।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ০১,২০২০)