হারার পেছনে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা দেখছেন তথ্যমন্ত্রী
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই নৌকার প্রার্থীরা ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার মতো কোনো রাজনৈতিক শক্তি দেশে নেই। তবে দলের নেতাকর্মীদের আরও বিনয়ী হতে হবে।’
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটির রংপুর বিভাগীয় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করার মতো শক্তি বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলের নেই। আপনারা দেখেছেন ঢাকা সিটি নির্বাচনে আমাদের সংগঠন ঐক্যবদ্ধ ছিল এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কারণে বিপুল ভোট পেয়ে আমাদের মেয়র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন এবং আমাদের যে সাংগঠনিক শক্তি সেটি আমরা ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দেখাতে সক্ষম হয়েছি।’
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কেন্দ্র দখল করে রেখেছিল বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধী দল বলেছে প্রতি কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের লোকেরা ছিল। বাংলাদেশের সমস্ত নির্বাচনে কেন্দ্রের বাইরে নেতাকর্মীদের ভিড় থাকে। এবারও নির্দিষ্ট দূরত্বে আইন মেনে আমাদের দলের ক্যাম্প করা হয়েছিল। সেখানে নেতকার্মীদের জটলা ছিল। প্রতি কেন্দ্রের বাইরে আমাদের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত ছিল। অন্যদিকে আমাদের মতো করে বিএনপিকে সেভাবে দেখা যায়নি। এটার কারণ হচ্ছে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা। আমাদের নেতাকর্মীদের প্রতি কেন্দ্রের বাইরে দেখা গেছে এর কারণ হচ্ছে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে আমি আরও মনে করি সংগঠনের মধ্যে নেতাকর্মীদের নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। সমস্ত জায়গায় যে অবক্ষয় সেই অবক্ষয়ের হাত থেকে রাজনীতিকে মুক্ত রাখতে হবে। সংগঠনের নেতাকর্মীদের নৈতিক মনোবল এবং তাদের মধ্যে রাজনীতি যে একটি ব্রত সেই জিনিষটি তাদের মধ্যে প্রতিথ করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘সাংগঠনিকশক্তির পাশাপাশি শেখ হাসিনার রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনার অনন্য দক্ষতার কারণেই আমরা পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায়। জনগণের সমর্থন ছাড়া আমরা একদিনও রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে চাই না। জনগণ সমর্থন দিলে অবশ্যই আমরা আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবো। মানুষ উন্নয়নের কারণে ভোট দেবে, কিন্তু উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কর্মীরা উদ্যত থাকে তবে জনগণ বিরক্ত হয়। গত ১১ বছরে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, সমস্ত বিশ্ব প্রশংসা করছে, পাকিস্তান আক্ষেপ করছে.... আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রশংসা করছে, এই যে উন্নয়ন, এই উন্নয়নের বার্তাগুলো যদি আমরা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারি এবং একই সঙ্গে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা যদি বিনয়ী হয়, বিনয়ের কোন বিকল্প নেই।
‘যারা ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করে তাদের যদি নিভৃত করতে পারি, নেতাকর্মীরা বিনয়ী হলে জনগণ অব্যাহভাবে আমাদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব দেবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ০৪,২০২০)