তামিমকে তিনবার বাড়ি থেকে বের করে দেন বাবা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিশ্বকাপজয়ী দল হিসাবে ইতিহাসের পাতায় উঠে গেছে বাংলাদেশের নাম। গত রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ক্রীড়াক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা।
বগুড়ার ছেলে তামিম। বর্তমানে লেখাপড়া করছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে (এআইইউবি)। ২০১৫ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৭ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পান তিনি।
তামিমের বাবা তোজাম্মেল হোসেন চেয়েছিলেন পড়াশোনা শেষ করে ছেলে চিকিৎসক বা প্রকৌশলী হবেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তামিমের ঝোঁক ছিল ক্রিকেটের প্রতি। ক্রিকেটের প্রতি ছেলের আগ্রহ দেখে মা রেহেনা বেগম নেন অন্য রকম কৌশল। স্কুলের পরীক্ষায় ভালো করলে ছেলেকে স্টেডিয়ামে নিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখানোর আশ্বাস দেন তিনি। খেলা দেখার লোভে তামিম পরীক্ষায় ভালো করতে শুরু করে।
পরে তামিমের মা ক্রিকেট অনুশীলন দেখাতে ছেলেকে নিয়ে যেতেন বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। স্থানীয় কোচ মোসলেম উদ্দিন তামিমের মাকে স্বপ্ন দেখালেন, তাঁর ছেলে একদিন বড় ক্রিকেটার হবেন। তবে ছেলের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বাদ সাধেন বাবা। রাগ করে একদিন ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তবে বাবা রাগ করলেও মা সব সময় ছেলের পাশে ছিলেন। মায়ের ইচ্ছায় পড়াশোনা ও ক্রিকেট একসঙ্গে চালিয়ে যান তামিম।
খেলার প্রতি ছেলের বেশি আগ্রহ পছন্দ করতে পারেননি তোজাম্মেল হোসেন। পরে আরও দুই দিন বাড়ি থেকে ছেলেকে বের করে দেন তিনি। এরপর লেখাপড়ায়ও আরও মনোযোগী হন তামিম। পরিক্ষাতেও ভালো ফলাফল করেন।
ভালো ফল করার পর বাবা তোজাম্মেল হোসেনের বরফ গলতে শুরু করে। অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর তামিমকে ২৫ হাজার টাকায় ব্যাট কিনে দেন তিনি। পরে মা-বাবার উৎসাহ আর বিসিবির জেলা কোচ মোসলেম উদ্দিনের অনুপ্রেরণায় পড়াশোনা ও ক্রিকেট সমানতালে চালিয়ে যান তামিম।
বাবা তোজাম্মেল হোসেন সোনাতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁকের কারণে তামিম পড়াশোনায় খারাপ করবে কিন্তু এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফল করায় ভুল ভাঙে। ছেলের এমন অর্জনে আমি ভীষণ খুশি।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ১২,২০২০)