খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িতে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে জানিয়েছে বিজিবি। স্থানীয়রা বিজিবির অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে গুলিবর্ষণ করে বলেও জানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

মঙ্গলবার রাতে বিজিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবৈধ কাঠ পাচাররোধে মঙ্গলবার বেলা ১১:৪৫ মিনিটে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গাজীনগর বাজার এলাকায় টহলে যায় বিজিবির একটি দল। এসময় বিজিবির উপস্থিতি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা টহল দলকে ঘিরে ফেলে। এতে উভয়পক্ষ্যের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে স্থানীয়রা বিজিবির অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এতে বিজিবির সিপাহী শাওন ও স্থানীয় পাঁচজনের গায়ে গুলি লাগলে বিজিবি সদস্যসহ চারজন মৃত্যুবরণ করে।

ঘটনার পর বিজিবি-সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই ঘটনায় নিহতরা হলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলার গাজীনগর এলাকার সাহাব মিয়া, তার স্ত্রী রঞ্জু বেগম, তাদের বড় ছেলে আকবর আলী, ছোট ছেলে আহমদ আলী, একই এলাকার সিরাজ মিস্ত্রির ছেলে মফিজ মিয়া এবং বিজিবি সদস্য শাওন।

এদিকে স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বৈদ্যুতিক তার টানার জন্য কয়েকটি গাছ কাটা হয়। এ সময় ট্রাক্টরে সাহাব মিয়া ও তার ছেলে আহামদ আলী কয়েক টুকরা গাছ গাজীনগর বাজারের একটি কাঠের মিলে নিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দেয় বিজিবি। একপর্যায়ে বিজিবির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন সাহাব মিয়া ও তার ছেলে। বিষয়টি দেখে এগিয়ে আসে গ্রামবাসী। এরপরই বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসী।

সংঘর্ষের সময় বিজিবি সদস্যরা গুলি করলে ঘটনাস্থলেই সাহাব মিয়া ও তার ছেলে আকবর আলী নিহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিজিবি সদস্য শাওন, আহমদ আলী, মফিজ মিয়া এবং হানিফ মিয়াকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে বিজিবি সদস্য শাওন ও আহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান মফিজ মিয়া। স্বামী ও দুই ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে মারা যান রঞ্জু বেগম।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৩ মার্চ,২০২০)