দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসা থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশু দুটির নাম জান্নাত (১১) ও আলভি (৮)।

শনিবার সকালে ৩৯৭ নম্বর দক্ষিণ গোড়ানের মোল্লা ভবনের চারতলা থেকে এই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে খিলগাঁও থানার পুলিশ। তাদের মাকে (আখতারুন্নেসা পপি) দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে নিজের হাতেই বটি দিয়ে দুই শিশুকে গলাকেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন দগ্ধ মা। ঠিক মতো স্বামী সংসার খরচ না দেয়ায় জীবনযাপনে দুর্বিষহ হয়ে উঠায় দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজেও শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান বলে জানান তিনি।

খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, মা পপিই দুই সন্তানকে খুন করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্বামী মুন্সিগঞ্জ থাকেন। সাংসারিক খরচ দেয়া না দেয়া নিয়ে পারিবারিক কহল চলছিল। গতরাতে দুই সন্তানকে খুন করার পর পপি সকালে নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টার আগে তার বাবা তালেবকে কল করে জানায় খুনের কথা ও নিজে আত্মহত্যা করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন এই খুন এবং এই খুনের নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত কিংবা অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না- তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

নিহত দুই শিশুর নানা আবু তালেব বলেন, ‘খিলগাঁওয়ে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে পড়াশোনা করতো তার দুই নাতনি জান্নাত (১২) ও আলভী (৭)। আলভী চতুর্থ শ্রেণিতে ও জান্নাত জুনিয়র ওয়ানে।’

তালেব আরও বলেন, ‘নাতনিদের মৃত্যুর খবর শুনে প্রথমে বাসায় ও পরে হাসপাতালে ছুটে আসি।’

মেধাবী দুই শিশুর বাবা মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় ইলেকট্রিক সামগ্রীর ব্যবসা করেন। প্রতি শুক্রবারে মুন্সিগঞ্জ থেকে খিলগাঁওয়ে আসেন আবার শনিবার মুন্সিগঞ্জে চলে যান।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘পপির পা ও হাত মিলিয়ে দেহের ১৮ শতাংশের মতো পুড়েছে।’

প্রতিবেশী মাহবুব হোসেনের ভাষ্য, ‘এই পরিবারের লোকজন অন্যদের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। গৃহবধূ পপি পর্দানশিন ছিলেন। তিনি মেয়েদের স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। প্রায়ই বাচ্চাদের মারধর করতেন তিনি। বাইরে থেকে তা বোঝা যেত। আজ সকালে পপির বাবা খুব জোরে বাইরে থেকে দরজা খোলার জন্য ধাক্কা দিচ্ছিলেন। কিন্তু দরজা খোলা হচ্ছিল না। পরে আমরাও যাই। এ সময় ভেতর থেকে দরজা খুলে দেওয়া হয়।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ মার্চ,২০২০)