করোনা: ইতালিতে একদিনে মৃত্যু ১৩৩
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনেই ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এখবর নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসির।
সরকারি সুরক্ষা সংস্থার হিসাবে, একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২৫ শতাংশ। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮৮৩ থেকে বেড়ে ৭৩৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে লাখ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা গ্রহণের মধ্যেই প্রাণহানি ও আক্রান্তের এই সংখ্যা বাড়ল।
নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে মূলত সংক্রামিতদের মধ্যে ৬২২ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আক্রান্তদের প্রায় দুই তৃতীয়াংশই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।আক্রান্তের সংখ্যা একদিনের রেকর্ডে এক হাজার ৪৯২ জন বেড়ে যাওয়ার পরে এখন চীনের বাইরে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে।
নতুন জারি করা কোয়ারেন্টিন নিয়ম অনুযায়ী ১৪টি প্রদেশের এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে ভ্রমণ করতে হলে বিশেষ অনুমতি লাগবে। প্রধানমন্ত্রী দেশ জুড়ে সব ধরনের স্কুল, ব্যায়ামাগার, জাদুঘর, নাইটক্লাব, এবং অন্যান্য জনসমাগম স্থান বন্ধ ঘোষণা করেছেন। আগামী ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধানও রয়েছেন। সালভাতোর ফারিনা বলেন, তিনি সেরে উঠছেন এবং নিজে থেকেই আইসোলেশনে রয়েছেন।
নতুন করে চালু হওয়া কোয়ারেন্টিনের কঠোর পদক্ষেপ দেশটির মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের উপর প্রভাব ফেলেছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে সমৃদ্ধ উত্তরাঞ্চলে যা দেশটির অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
লম্বার্ডিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। উত্তরাঞ্চলীয় ওই এলাকায় এক কোটির মতো মানুষ বাস করে। সেখানে আক্রান্তদের হাসপাতালের করিডরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা আমাদের জনগণের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে চাই। আমরা বুঝি যে, এই ব্যবস্থার কারণে ছোট-বড় নানা ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।’
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মানুষ নির্বিঘ্নে লম্বার্ডিতে প্রবেশ বা বেরিয়ে যেতে পারবে না। ওই এলাকার প্রধান শহর মিলান। একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আরো ১৪টি প্রদেশে: মদেনা, পারমা, পিয়াচেনসা, রেজিও এমিলিয়া, রিমিনি, পেজারো এন্ড উরবিনো, আলেসান্দ্রিয়া, আস্তি, নভারা, ভেরবানো কুজিও ওসোলা, ভারসেই, পাদুয়া, ত্রেবিসো ও ভেনিস।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসব এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর।
রোববার আক্রান্ত এসব এলাকায় কিছু যান চলাচল ছিল। কিছু নিয়মিত ফ্লাইট বাতিল করা হলেও মিলানের মালপেনসা ও লিনাতে বিমানবন্দরে এখনো কিছু ফ্লাইট চলাচল করছে।
যাই হোক, ইতালির জাতীয় বিমান সংস্থা অলইতালিয়া বলেছে, সোমবার থেকে মালপেনসা থেকে সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হবে এবং লিনাতে শুধু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু থাকবে। আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল রোম থেকে পরিচালিত হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস আধানম ঘেব্রেয়েসাস ইতালির এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯ মার্চ,২০২০)