মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে বিদেশ থেকে আসা ৫৯ ব্যক্তিকে নিজ বাড়িতে বিশেষ ব্যবস্থায় (হোম কোয়ারেন্টাইন) রাখা হয়েছে। তাদের ও তাদের পরিবারের লোকজনকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাসের জীবাণু থাকতে পারে এমন আশঙ্কায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৫৯ জন ব্যক্তি বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪ জন নারীসহ ৩২ জন, সাটুরিয়ায় ১৮ জন, শিবালয়ে ৬ জন, দৌলতপুরে ২ জন এবং সিঙ্গাইরে ১ জন ব্যক্তি আছেন।

তারা ইতালি, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। তাদের সবাইকে নিজ বাসায় বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। বিদেশ ফেরত ব্যক্তিসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বাড়ির ভেতরে রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, বিদেশফেরত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের কাউকে নিজ বাড়ি থেকে বাইরে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।

সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা সবাই পুরোপুরি সুস্থ আছেন। তাদের শারীরিক কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। করোনাভাইরাস নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। এই ভাইরাস প্রতিরোধে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন শনাক্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। সোমবার থেকে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতলায় একটি বড় আয়তনের কক্ষে ১২ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। এই হাসপাতালে ৯ সদস্যবিশিষ্ট কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) সাকিনা আনোয়ারকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটের রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো এই কমিটির প্রধানতম কাজ।

এ ছাড়া মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার কেওয়ারজানী এলাকায় আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউশনের নতুন ভবনে ১০০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন ইউনিট খোলা হয়েছে। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।

তবে রোগীদের চিকিৎসার সময় চিকিৎসক, নার্স ও অন্যদের নিরাপত্তায় মাস্কের স্বল্পতা রয়েছে। গাউনের ব্যবস্থাও নেই। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মাস্ক ও গাউনের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের সহায়তায় গাউনের ব্যবস্থা করা হবে। আগামী দুই-একদিনে মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় মাস্ক ও গাউনসহ অন্যান্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১০মার্চ,২০২০)