কর্মসূচি স্থগিত, প্রাথমিকের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ‘বিশেষ বার্তা’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আগামী ১৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ানো কর্মসূচি স্থগিত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে এই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হবে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর সেই চিঠি পাঠানো হবে, কিন্তু ১৭ মার্চ সেই চিঠি পড়ানো হবে না।’ অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আগামী ১৭ মার্চের সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর লেখা চিঠিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
ছোট সোনামণি,
আমার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিও। তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম ও ভাইবোনদের স্নেহ পৌঁছে দিও? পাড়া-প্রতিবেশীদের প্রতি শুভেচ্ছা রইলো।
আজ ১৭ই মার্চ। ১৯২০ সালের এদিনে বাংলার মাটিতে জন্ম নিয়েছিলেন এক মহাপুরুষ । তিনি আমার পিতা, শেখ মুজিবুর রহমান ।
বাংলাদেশ নামের এই দেশটি তিনি উপহার দিয়েছেন। দিয়েছেন বাঙালিকে একটি জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের সুযোগ। তাইতো তিনি আমাদের জাতির পিতা।
দুঃখী মানুষদের ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে নিজের জীবনের সব সুখ-আরাম বিসর্জন দিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। মানুষের দুঃখ-কষ্ট তাকে ব্যথিত করতো । অধিকারহারা দুঃখী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেকোনও ত্যাগ স্বীকারে তিনি দ্বিধা করেননি । এই বঙ্গভূমির বঙ্গ-সন্তানদের একান্ত আপনজন হয়ে উঠেছিলেন—তাই তিনি বঙ্গবন্ধু।
২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক দেশ এই জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিববর্ষ উদযাপন করছে। সকলকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
প্রিয় বন্ধু,
ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে জাতির পিতাকে। তাঁর নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা পারেনি । ঘাতকেরা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর রক্ত ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে-বেয়ে ছড়িয়ে গেছে সারা বাংলাদেশে। জন্ম দিয়েছে কোটি কোটি মুজিবের । তাই আজ জেগে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষ সত্যের সন্ধানে। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে মিথ্যা দিয়ে দাবিয়ে রাখা যায় না। আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী । বাংলাদেশকে বিশ্ব চিনে নিয়েছে তাঁরই ত্যাগের মহিমায় ।
সোনামণি,
জাতির পিতার কাছে আমাদের অঙ্গীকার, তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়বোই । আর সেদিন বেশি দূরে নয়। পিতা ঘুমিয়ে আছেন টুঙ্গিপাড়ার সবুজ ছায়াঘেরা মাটিতে পিতামাতার কোলের কাছে। তিনি শান্তিতে ঘুমান। তাঁর বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা জেগে রইবো তাঁর আদর্শ বুকে নিয়ে। জেগে থাকবে মানুষ— প্রজন্মের পর প্রজন্ম—তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে । জাতির পিতার দেওয়া পতাকা সমুন্নত থাকবে চিরদিন।
তোমরা মন দিয়ে পড়ালেখা করবে, মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করবে ।
জয় বাংলার জয়, জয় মুজিবের জয়, জয় বঙ্গবন্ধুর জয়।
তোমারই
শেখ হাসিনা
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৬মার্চ,২০২০)