দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যায় এখন ইতালি চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৪২৭ জনের প্রাণহানির ঘটনায় ইউরোপের দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ জন।

চীনে মারাত্মক এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩ হাজার ২৪৫ জন। চীন সরকার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে আক্রান্ত প্রদেশ, শহর ও অঞ্চল কঠোরভাবে লকডাউন করে দেয়।

গত বুধবারই ইতালিতে একদিনে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪৭৫ জন। এখন পর্যন্ত এটাই যেকোনও দেশের জন্য একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

এখন পর্যন্ত ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মোট ৪১ হাজার ৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৩২২ জন। করোনায় ইতালির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল লম্বার্ডিতে এক দিনে ৩১১ জন মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার চীনা রেড ক্রসের একটি দল ইতালি পরিদর্শন করে দেশটির আক্রান্ত অঞ্চলের আইসোলেশন ব্যবস্থা ও জাতীয় লকডাউন ব্যবস্থার ত্রুটি আছে বলে সমালোচনা করেছে।

জাতিসংঘ এবং ইতালির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দেশটিতে উচ্চ মৃত্যুর হারের বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছে। বিশেষত ইতালিতে বয়স্ক লোকের সংখ্যা অধিক হওয়ায় ভাইরাসটিতে মৃতের হার বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে মারা যাওয়া লোকেদের মধ্যে ৮৭ ভাগের বয়স ৭০ বছরের বেশি।

ইতালির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ, যা গত তিনদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন দেশটিতে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৩২২ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৩৫ জন।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। এরপর তা পুরো চীন ও বিশ্বের অন্তত ১৭৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বৈশ্বিক এ মহামারিতে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ১০ হাজার ৩০ জন। যার বেশিরভাগই ইতালি ও চীনের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ২ লক্ষাধিক করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৮০ শতাংশই ইউরোপ এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘটেছে, যার মধ্যে রয়েছে এশিয়ার অনেক দেশ।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের পরেই সবচেয়ে বেশি আঘাত এসেছে ইরানে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে ইতোমধ্যে ১ হাজার ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণে।

এদিকে বাংলাদেশে শেষ ৩ জনের আক্রান্তের ঘটনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনায় আক্রান্ত তিনজন একই পরিবারের সদস্য। তাদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। আক্রান্ত ওই নারীর বয়স ২২ বছর। পুরুষ দুইজনের বয়স যথাক্রমে ৬৫ ও ৩২ বছর। আক্রান্তদের পরিবারের একজন ইতালি ফেরত।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২০মার্চ,২০২০)