কায়সারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিল
দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মো. কায়সারের বিরুদ্ধে ১৮টি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেছে প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমের নেতৃত্বে প্রসিকিউশন টিম রবিবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে এ অভিযোগ দাখিল করেন। এসব অভিযোগ আমলে নেয়া হবে কি না সে বিষয়ে শুনানির জন্য সোমবার দিন ঠিক করতে পারেন ট্রাইব্যুনাল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, একাত্তরে হবিগঞ্জের কায়সার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ কায়সারের বিরুদ্ধে ১৮টি অভিযোগ সুবিন্যস্থ করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর সৈয়দ কায়সারের বিরুদ্ধে ১৬ টি অভিযোগে চূড়ান্ত করে প্রসিকিউশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত সংস্থা। সেসব অভিযোগ যাচাই বাছাই করে দুটি অভিযোগ বৃদ্ধি করে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এ মামলাটিতে ৭০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ জুলাই কায়সারকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল-২। মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন আসামীদের মধ্যে কায়সার দ্বিতীয় আসামী যাকে জামিনে রেখে বিচার চলছে।এর আগে গত ২২ মে ট্রাইব্যুনাল-২ সৈয়দ মো. কায়সারের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১৫ মে কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ২১ মে বিকেল পৌনে ৪টায় কায়সারকে রাজধানী অ্যাপলো হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
কায়ছারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো-
১ নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল শাহজাহান চেয়ারম্যানকে হত্যা, নায়েব আলীকে জখম ও বাড়িতে হামলা লুটপাট।
২ নম্বর অভিযোগ : একইদিন মাধবপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ও কটিয়ারায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ।
৩ নম্বর অভিযোগ : ২৭ এপ্রিল একাত্তর সালে কৃষ্ণনগর গ্রামের অহিদ পাঠানসহ ৪ জনকে হত্যা, লুটপাট।
৪ নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল আব্দুস সাত্তারসহ ১৫ জনকে হত্যা, কদর আলীকে নির্যাতন ও বাড়িঘর লুটপাট।
৫ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ২৯ এপ্রিল আব্দুল আজিজসহ ৭ জনকে নির্যাতন করে হত্যা।
৬ নম্বর অভিযোগ : ২৯ এপ্রিল ডা. সালেহ উদ্দিন আহমেদসহ ২ জনকে নির্যাতন করে হত্যা।
৭ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ৩০ এপ্রিল এনএনএ মোস্তফা আলীর বাড়িসহ ৪০/৪৫ বাড়িতে লুটপাট।
৮ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ১১ মে সাঁওতাল রমণীকে ধর্ষণে সহায়তা।
৯ নম্বর অভিযোগ : ১৫ মে একাত্তর সালে মাধবপুর থানার লোহাইদ এলাকায় আব্দুল আজিজসহ ৮ জনকে হত্যা।
১০ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ১৩ জুন হবিগঞ্জের সদর থানায় শাহ ফিরোজ আলীকে অপহরণ করে হত্যা।
১১ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ২৩ জুন হরিপুর থানার গোলাম রসুল ও তার পরিবারকে নির্যাতন অনেককে অপহরণ পরে লুটপাট।
১২ নম্বর অভিযোগ : একইদিন গুটমা থানার দয়াল গোবিন্দের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট।
১৩ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ২৩ জুন নাসিরনগর থানার ছায়েদুল হকের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট।
১৪ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আতাব মিয়া গংদের অপহরণ করে ও মাজেদাকে ধর্ষণ করে।
১৫ নম্বর অভিযোগ : একাত্তর সালের ১৮ আগস্ট মহিবুল্লাহসহ ৪ জনকে অপহরণ করে হত্যা।
১৬ নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মাধবপুর থানায় সিরাজ আলীসহ ৪ জনকে অপহরণ করে হত্যা।
১৭ নম্বর অভিযোগ : একাত্তরে অক্টোবর মাসে নাজিম উদ্দিনকে অপহরণ করে হত্যা।
১৮ নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ ১০৮ জনকে হত্যা।
(দিরিপোর্ট২৪/এআইপি/এপি/নভেম্বর/নভেম্বর ১০, ২০১৩)