যুক্তরাষ্ট্রে দু’দিনে মারা গেছেন ১৫ বাংলাদেশি
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘন্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আরও ৫ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে করোনায় গত দুইদিনে দেশটিতে মারা গেলেন মোট ১৫ বাংলাদেশি।
মঙ্গলবার নতুন করে মারা যাওয়া ৫ বাংলাদেশির মধ্যে ৪ জনই নিউইয়র্কের বাসিন্দা। বাকি একজন নিউজার্সির।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মারা গেলেন মোট ২৫ জন বাংলাদেশি। তবে, অনেক প্রবাসী বাংলাদেশির মতে, করোনায় সেখানে কমপক্ষে ৩৫ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
মরণব্যাধি করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, বাড়ছে উৎকণ্ঠা। দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যাও ৪ হাজার পেরিয়েছে।
প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে করোনায় মৃত্যুর মিছিলে। প্রতি মুহুর্তে মৃতদের তালিকায় যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। তবে সবচেয়ে করুণ অবস্থা নিউইয়র্ক নগরীর।
সেখানকার বাসিন্দারা ঘুমাতে যান মৃত্যুর কথা শুনে। আবার ঘুম ভেঙেও শুনেন মৃত্যুর সংবাদ। এই রকম কঠিন বাস্তবতা নিয়ে বেঁচে আছেন ওই রাজ্যের বাসিন্দারা।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিব বাহিনীর গেরিলা কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার ইব্রাহিম খানসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত অপর ব্যক্তি প্রবাসী সাংবাদিক এ হাই স্বপন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ইব্রাহিম খান (৭৯) মঙ্গলবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রকলিনের কিংস কাউন্টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন।
তার ছোট ভাই বদরুল আলম জানান, আগামী বৃহস্পতিবার ব্রকলিনেই তাকে দাফন করা হবে।
ইব্রাহিম খান চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার জিরি এলাকার বাসিন্দা। তিনি আওয়ামী যুবলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন।
ইঞ্জিনিয়ার ইব্রাহিম খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন পটিয়ার এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এদিকে প্রবাসী সাংবাদিক এ হাই স্বপনও নিউইয়র্কের জ্যামাইকাতে একটি হাসপাতালে সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১১টায় মারা যান।
শুক্রবার করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন স্বপন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন।
নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে এ হাই স্বপন মানবজমিনের সিনিয়র ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
দুই বছর আগে নিউইয়র্কে তার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। এরপর তার কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় তা ট্রান্সপ্লান্টের প্রস্তুতি চলছিল। এর মধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষায় তার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে একের পর এক বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় প্রবাসীদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০১এপ্রিল,২০২০)