২২২ বছর পর বাতিল হতে চলেছে হজ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সৌদি আরবেও আঘাত হেনেছে ভয়াবহ করোনাভাইরাস। দেশটিতে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৮৫ জন মানুষ এবং এতে মারা গেছেন মোট ২১ জন। করোনা ঠেকাতে গোটা দেশেজুড়ে চলছে লকডাউন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে সৌদি আরবের দুই পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনাতে।
এই পরিস্থিতিতে সৌদিতে চলতি বছর মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় জমায়েত পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ১৭৯৮ সালের পর এবারই প্রথম বাতিল হতে পারে হজ। সৌদিতে এর আগে দীর্ঘ ২২২ বছর আগে হজ বাতিল হয়েছিল।
সৌদি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর বাতিল হতে পারে হজ।
ইসলামের ইতিহাসে অবশ্য হজ বাতিল কোনও নতুন ঘটনা নয়। তবে আধুনিক ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। সর্বশেষ ২২২ বছর আগে ১৭৯৮ সালে হজ বাতিল করা হয়েছিল।
সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে। এ থেকে অনুমান করা হচ্ছে, চলতি বছর হজ অনুষ্ঠিত নাও হতে পারে। জুলাই মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়ার কথা এ বছরের হজের আনুষ্ঠানিকতা। তবে হজের নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম এখনও বন্ধ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলিমদের হজে অংশগ্রহণের বিষয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র এবং হজের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সৌদি আরবের দুই শহর মক্কা ও মদিনা। করোনার কারণে দুটি শহরই গত এক মাস ধরে দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রয়েছে।
১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির সময়ও এই দুটি শহর বন্ধ করা হয়নি। সৌদি কর্মকর্তারা বিদেশের জন্য দেশের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং আংশিকভাবে হজের আগে এই ভাইরাসটি নির্মূল করার আশায় মক্কা ও মদিনার অভ্যন্তরে চলাচলে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বান্তেন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, সৌদি আরব সমস্ত মুসলিম ও নাগরিকের সুরক্ষার জন্য প্রস্তুত। এ কারণেই আমরা পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে হজের বিষয়ে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্বের সমস্ত মুসলিমদের কাছে এই মুহূর্তে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করার জন্য অনুরোধ করেছি।
তিনি আরও জানান, হজের প্রস্তুতি নিয়ে মুসলিম দেশগুলোকে তাড়াহুড়ো না করার অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে করোনা মহামারির গতিপ্রকৃতির ওপর।
তাছাড়া তারা এখন জনস্বাস্থ্যের বিষয়টির দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলেও ওই সৌদি মন্ত্রী জানান।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৩এপ্রিল,২০২০)