গ্রাম থেকে গ্রামে একাই ছুটে চলছেন মাশরাফি
নড়াইল প্রতিনিধি: মোটরসাইকেল নিয়েই বেড়িয়ে পরেন মাশরাফি। নড়াইল শহর থেকে বেরিয়ে মুলিয়া এলাকায় গিয়ে হঠাৎ মোটরসাইকেল থামালেন। একজন কৃষক জমিতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। তার সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে বললেন, ‘চাচা আসসালামু আলাইকুম, আমি মাশরাফি। কেমন আছেন আপনি? আপনার বাসার সবাই ভালো? ঘরে খাবারদাবার আছে চাচা? এই নেন (এক প্যাকেট খাবার আর কিছু টাকা)। আসি চাচা, আমার জন্য দোয়া করবেন। করোনা সংক্রমণ থেকে সাবধানে থাকবেন।’
কৃষকের হাতে এক প্যাকেট খাবার দিয়ে আবার মোটরসাইকেলে চলতে শুরু করলেন। এ যেন এক অন্যরকম এমপি। তিনি নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মোটরসাইকেলে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছুটে চলছেন। করোনা পরিস্থিতিতে নিচ্ছেন মানুষের খোঁজখবর তিনি। হাতে হাতে তুলে দিচ্ছেন ব্যক্তিগত ত্রাণসামগ্রী। সংসদ সদস্য হলেও আশপাশে নেই পুলিশ। নেই কোনো গাড়িবহর কিংবা হুইসেল।
কোটি কোটি টাকার দামি গাড়িতে চড়েন না এই এমপি। গাড়ির গ্লাস খুলে জনতাকে ডাকেন না। পুলিশ কিংবা নিরাপত্তারক্ষী নেই তার। নিরাপত্তারক্ষী থাকলে হয়তো গাড়ি থামিয়ে গ্লাস খুলে জনতাকে ডাকতেন, ‘ওই চাচা, আপনাকে এমপি মহোদয় ডাকেন।’
কিন্তু মোটরসাইকেল থামিয়ে হাতে খাবারের প্যাকেট দিয়ে চলে যাওয়া এমপির দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন ওই কৃষক। বাড়িতে গিয়ে হয়তো ওই কৃষক স্ত্রী-সন্তানদের উৎফুল্ল মনে বলছেন; জানিস আজ কার সাথে দেখা হয়েছিল? এই খাবারের প্যাকেট কে দিয়েছে?
নিম্নআয়ের এমন অসংখ্য মানুষের বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে কাউকে খাবার, কাউকে টাকা দিয়ে গেছেন তিনি। এসব পরিবারের আত্মসম্মানের কথা ভেবে ত্রাণ কিংবা সহযোগিতা দেয়ার ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন এমপি। এসব মানুষ কখনও মাশরাফির এসব সহযোগিতার কথা ভুলবে না। মনভরে মাশরাফির জন্য দোয়া করবে; যুগ যুগ বেঁচে থাকার।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৬এপ্রিল,২০২০)