ভুল স্বীকার, উহানে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়েছে চীন
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে চীন। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি যখন করোনা-ঝড়ে বিধ্বস্ত, তখন ক্রমে সেরে উঠছে চীন। থেমেছে মৃত্যুমিছিল, কমেছে সংক্রমণ। কিন্তু করোনার উৎপত্তিস্থল উহান শহরে যত জন মারা গেছিলেন বলে সরকারি ভাবে বলা হয়েছিল, সেই মোট মৃত্যুর সংখ্যা আগের চেয়ে আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে চীন। খবর বিবিসির।
কী করে এমনটা হল তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উহান কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেক মৃত্যুর সংখ্যা ভুল করে লেখা হয়নি। এছাড়া অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর সুযোগ পায়নি। পাশপাশি বেশ কিছু করোনা রোগী হাসপাতালে আসার আগে বাড়িতেই মারা গেছেন। তাই মৃত্যু নিয়ে সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা যায়নি তখন। পরে হিসাব করে ভুল ধরা পড়েছে। তবে নতুন করে এভাবে মৃত্যুসংখ্যা প্রকাশ করায় চিন সরকারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উহান জানিয়েছে, এর আগে বলা হয়েছিল ২৫৭৯ জন করোনা আক্রান্ত মারা গেছেন উহানে। কিন্তু এখন উহান শহরে আরও ১২৯০ জনের মৃত্যু দেখানো হয়েছে। ফলে এই নিয়ে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহরে ৩৮৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে মোট। এরফলে পুরো চীনেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৩২ জনে।
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই পশ্চিমাদের তোপের মুখে পড়েছে চীন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি দাবি করেছেন, মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মিথ্যা বলছে চীন। সংখ্যাটা কম করে ৪২ হাজার বলেও দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু মৃতের সংখ্যা নিয়ে নয়, চীন প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে তথ্য গোপন করেছে বলেও অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এও দাবি করা হয়েছে, উহানের গবেষণাগারে জৈবরাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি।
এবার চীন নিজেই জানাল, তাদের গণনায় ভুল হয়েছিল। কোভিড ১৯-এ চিনের উহানে যত জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, আদতে সংখ্যাটা নাকি তার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। এ কথা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেও জানিয়েছে উহান কর্তৃপক্ষ।
চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াতেও প্রকাশ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনায় মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ১২৯০ জনের নাম। এ সময়ের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ৩২৫ জন বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার ৩৩৩ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটার জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৫২১ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ২১ লাখ ৮২ হাজার ১৯৭ জন। অপরদিকে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ২৯১ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭এপ্রিল,২০২০)