বাতাসে কতদূর ছড়ায় করোনাভাইরাস?
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারির আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই এই মরণ রোগ নিয়ে নিত্য নতুন তথ্য সামনে আসছে। কোভিড-19-এ আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, থুতু, কফ, তার ছোয়া সব কিছু থেকে ছড়াচ্ছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। এই অবস্থায় সচেতনতা থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।
সম্প্রতি, নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস বাতাসে কমপক্ষে ১৩ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য যে নির্দেশনা দেয়া হয় এ দূরত্ব তার দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এ বিষয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চীনা গবেষকদের প্রাথমিক এই গবেষণাটি প্রকাশ করা হয় ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজ জার্নালে। প্রকাশিত গবেষণায় দেখানো হয়েছে ভাইরাসটি আগে অফিশিয়াল নির্দেশনার চেয়ে বেশি দূরে ছড়াতে পারে। তাদের দেয়া তথ্যে বর্তমানে মানুষকে দ্বিগুণ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া ভাইরাসটি মানুষের জুতার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার বৈশিষ্ট্য এটাই নির্দেশ করে যে কোভিড-19 সংক্রমণ দূরত্ব কমপক্ষে ৪ মিটার যা ১৩ ফুটের চেয়ে বেশি। এছাড়া আইসিইউয়ের মেডিকেল কর্মকর্তাদের জুতার সোলের নমুনা করে দেখা গেছে অর্ধেকের বেশি জুতায় করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।
চীনের উহানের হুশেনশান হাসপাতাল থেকে ওই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এতে ধারণা করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের জুতার সোল করোনাভাইরাস ছড়ানোর কারণ হতে পারে।
বেইজিংয়ের অ্যাকাডেমি অব মিলিটারি মেডিকেল সায়েন্সেসের একটি দলের গবেষণার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে এ আশঙ্কাকে আবারও নিশ্চিত করে দেখা হচ্ছে যেখানে বর্তমান ৬ ফুট দূরত্বের দিকনির্দেশনা যথেষ্ট নাও হতে পারে। এটি ব্যক্তি বা বিশেষত সামনের সারির মেডিকেল কর্মীদেরও পরামর্শ দেয় যাতে অজান্তে ভাইরাসের উৎস হিসেবে এটি ছড়িয়ে না পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কঠোর জীবাণুনাশক ব্যবস্থা নিতে হবে।
সিডিসির পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ৬ ফুট দূরত্বের কথা বলা হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) মনে করে ৩ ফুট দূরত্ব যথেষ্ট। বর্তমান গবেষণায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার দূরত্বের চেয়ে যা অনেক কম।
এর আগে গত মাসে গবেষকেরা বলেছিলেন, ভাইরাস ২৭ ফুট পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি এস ফাউসি অবশ্য একে ‘ভয়ানক বিভ্রান্তিকর’ বলেছেন। তিনি বলেছেন, বাস্তবে খুব জোরে হাঁচি না হলে এত দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব নয়।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭এপ্রিল,২০২০)