জানাজায় মানুষের ঢল, সরাইলের ওসি প্রত্যাহার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতির মধ্যে জেলার লকডাউন উপেক্ষা করে সরাইলে ইসলামী আলোচক ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণের ঘটনায় ব্যর্থতার দায়ে সরাইল থানার ওসি শাহদাৎ হোসেন টিটুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে তাকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে যুক্ত করতে বলা হয়।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আলাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার সকালে ওই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় প্রশাসন এ অবস্থায় নীরব ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়লো।
সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু লাখো মানুষের সমাগমের বিষয়ে বলেন, ‘জানাজায় অংশ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও ঢাকা থেকে লোকজন আসে। আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে এত লোকসমাগম হবে। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিল না।’
এদিকে মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিন করতে চায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ। এরইমধ্যে সরাইলের ছয়টি গ্রাম লকডাউন করা হয়েছে। গ্রামের কেউ যাতে বের হতে না পারে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া আশুগঞ্জ ও সরাইল থেকেই বেশিরভাগ মানুষ জানাজায় অংশ নিয়েছেন ধারণা করে এই দুই উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টিন অবস্থা নিশ্চিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ‘নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ছোট পরিসরে জানাজা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আমাদের কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা তারা রাখেননি।’
সরাইলের পানিশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিন ইসলাম বলেন, ‘শনিবার বিকাল ৫টার পর উপজেলার ছয়টি গ্রাম লকডাউন করা হয়েছে। বেড়তলা, বলিবাড়ী, সীতাহরণ, শান্তিনগর, মইশার, টিঘর এই গ্রামগুলো লকডাউন হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় লকডাউন চলছে। এরইমধ্যে মাওলানা জোবায়ের শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে শনিবার সকাল ১০টায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জানাজা শেষে সরাইল উপজেলার বেড়তলায় অবস্থিত জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাকে দাফন করা হয়।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯এপ্রিল,২০২০)