দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারতের হায়দ্রাবাদে লকডাউনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫০ বছর বয়সী অটোচালক বেনু মুদিরাজের। খাইরাতাবাদের বাসিন্দা বেনু যক্ষায় মারা গেলেও করোনা আতঙ্কে তার শেষকৃত্যে এগিয়ে আসেনি কোনও প্রতিবেশি। তবে পার্শ্ববর্তী এলাকার পাঁচ মুসলিম তরুণ কাঁধে তুলে নিয়েছে বেনুর মরদেহ। যথাযথভাবে সম্পন্ন করেছে শেষকৃত্য।

আগেই মারা গিয়েছিলেন বেনুর স্ত্রী। ঘরে ছোট ছোট দুটি ছেলে-মেয়ে। কয়েক কিলোমিটার দূরের এক গ্রামে থাকা তার বড়ভাই বিনোদ হাসপাতাল থেকে বেনুর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে আপত্তি জানায় প্রতিবেশিরা। তাদের সন্দেহ, যক্ষা নয়, করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে বেনুর। তার মরদেহ সৎকারে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্যও কাউকে পাওয়া যায় না।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেনুর সন্তানদের কাছে শেষকৃত্য আয়োজনের মতো টাকা ছিল না। প্রতিবেশিরাও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরিবারটি যখন সব আশা ছেড়ে দিয়েছে, ঠিক তখন অপ্রত্যাশিতভাবে এগিয়ে আসেন ওই পাঁচ মুসলিম যুবক।

‘তার যক্ষা ছিল। লকডাউনের কালে তার অবস্থার অবনতি হয়। তবে তার মৃত্যুর পর আসলে তার সন্তানদের দায়িত্ব নেওয়ার মতো কেউ নেই। কয়েক বছর আগে ওদের মা-ও মারা গেছেন।’ বলেন বেনুর ভাই বিনোদ।

৫ বন্ধুর একজন সমাজকর্মী সাদেক বিন সালাম। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকার এক বন্ধু আমাদের কাছে আসে। সে জানায়, কোভিড-১৯ আতঙ্কে কেউ সেই মৃত ব্যক্তির সৎকার কাজে এগিয়ে আসছে না। সে কথা শুনেই আমি আর আমার চার বন্ধু পরিবারটিকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিই।’ তিনি তার বন্ধু মোহাম্মদ মজিদ, আব্দুল মুক্তাদির, মোহাম্মদ আহমেদ, শাইক খাসিম নিরাপত্তা কতৃপক্ষের কাছে অনুমতি নিয়ে শেষকৃত্যের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ওই পরিবারের সদস্যসহ শেষকৃত্যে অংশ নেওয়া কয়েকজন মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করেন তারা।

সালাম বলেন, তাবলীগ জামাত ইস্যুকে কেন্দ্র করে যখন থেকে মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু বানানো শুরু হলো, তখন থেকেই এমন কিছু একটা করার কথা ভাবছিলাম যা বিভেদ আর ঘৃণার বদলে ঐক্যের দৃষ্টান্ত হবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, শেষকৃত্যে মাত্র ১০ মানুষ মানুষ অংশ নেয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২০এপ্রিল,২০২০)