রমযান মাসের যত ফজিলত
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: শুরু হয়ে গেছে মুমিনের সিয়াম সাধনার মাস রমযান। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কাছে, আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের কাছে এই মাস যেন বহুল প্রতীক্ষিতের। মুমিন বান্দাগণ সারা বৎসর অপেক্ষা করে থাকেন, পবিত্র এই মাসের জন্য।
বুখারী শরীফের ১৮৯৯ নং হাদীস অনুসারে হযরত আবু হুরাইরা (রা.) ইরশাদ করেন, নবী করীম (সা.) বলেন, যখন রমযান মাস আসে তখন আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়।
সহীহ মুসলিম ১০৭৯ নং হাদীসের বর্ণনায় আছে, জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়, শয়তানকে শিকলে বন্দী করা হয়। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, রহমতের দরজা খুলে দেয়া হয়।
অবশ্য এবারের রমযান মাস একটু ব্যতিক্রম। পুরো পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। আর এতে মুমিনের ভীত হওয়ার কোন কারণ নেই। এমনও হতে পারে মহান আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের পরীক্ষা জন্যই এমন মুসিবত পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
বিভিন্ন যুগে আল্লাহ পাক তার প্রিয় বান্দাদের এমন অসংখ্য বালা মুসিবতে ফেলেছেন। আবার তিনি নিজ গুনেই এসকল বিপদ থেকে তার প্রিয় বান্দাদের উদ্ধার করেছেন।
হয়তো রমযানের এই পবিত্রতা আবার ঠিক করে দিবে পুরো পৃথিবী। সারা বিশ্বে আবার জাগরিত হবে লক্ষ কোটি প্রাণ। মানবজাতি যে সৃষ্টিকর্তার কাছে কত অসহায় তা প্রমাণের জন্যই হয়তো এমন পরীক্ষা।
মাহে রমজানের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে সূরা বাকারার ১৮৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়,“রমজান মাসই হলো সেই মাস যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।
রমজান মহান আল্লাহর সঙ্গে প্রিয় বান্দাদের ভাব বিনিময়ের সবচেয়ে উত্তম সময়। মুসনাদে ওয়াসেল বিন আসকা থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) বলেন, এই রমযানের প্রথম রাতে হজরত ইবরাহীম (সা.) এর সহীফা, ৬ই রমযান হজরত মূসা (সা.) এর ওপর তাওরাত, ১৩ই রমযান ঈসা (সা.) এর উপর ইঞ্জিল এবং ২৪শে রমযান (দিবাগত রাত) কুরআন নাজিল হয়েছে।
পবিত্র মাহে রমজান সিয়াম সাধনার উপর গুরুত্ব আরোপ করে সহীহ বুখারী’র ১৭৯৭ নং হাদীস ও সহীহ মুসলিমের ২৭৬৬ নং হাদীসে রাসূল (সা.) বলেন, জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে বলা হয় ‘রাইয়ান। কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে রোযাদারগণ প্রবেশ করবে। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। রোযাদারগণ প্রবেশ করলে এ দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
কথিত আছে, এই রমযান হজরত দাউদ (সা.)এর নিকট যাবূর কিতাব নাজিল হয়। পবিত্র রমযান মাসেই অতীতের উম্মতগুলোর কাছে আল্লাহ হেদায়াতের বাণী এসেছিল। আর তাই বলা যায় মাহে রমযান হল কল্যাণ, পুরস্কার ও হেদায়াত লাভের ভরা মওসুম।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৬এপ্রিল,২০২০)