আগাম বন্যার শংকায় হাওরে আধা পাকা ধান কাটছেন কৃষকরা!
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: আগাম বন্যার শংকায় সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরের খরচার হাওরে জলাবদ্ধতায় থাকা বেশ কিছু ফসলী জমির আধা পাকা বোরো ধান কাটছেন কৃষকরা।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওরের উপকারভোগী কৃষকরা জানান, অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানি ক্রমশ হাওরে বাড়ছে।
এর ফলে খরচার হাওরের নিচু এলাকায় থাকা ফসলী জমির আধা পাকা বোরো ধান আগাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবার শংকা তৈরী হয়েছে কৃষকদের মধ্যে।
শনিবার সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরের বাজারের দক্ষিণ দিকে ফসল রক্ষা বাঁধের পাশে কৃষক ও ধাওয়ালীরা জলাবদ্ধতা লেগে থাকা কোমর পানিতে নেমে জমির আধাপাকা বোরো ধান কাটছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান,গত দুয়েক দিনের থেমে থেমে নামা অতি বৃষ্টি ও উজানের পানি পানি প্রবাহিত হওয়ায় হাওরের উচু এলাকায় জমে থাকা পানি হাওরের নিচ এলঅকার দিকে প্রবাহিত হওয়ায় আমাদের জমিতে আধাপাকা ধান জলাবদ্ধতা লেগে আছে। যদি লাগাতার বৃষ্টি ও উজানের পানি আসা অব্যাহত থাকে সেকারনে আমরা আগাম বন্যার শংকায় আধাপাকা ধানই কেটে নিচ্ছি।
উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক নারায়ণ বর্মণ বলেন, প্রতিবছর হাওরের এসব জমি জলাবদ্ধতার কারনণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এবারও ব্যাতিক্রম হয়নি। আমা জমির ধান অর্ধেক পেকেছে আগাম বন্যায় ডুবে যাওয়া শংকায় আমি আমার জমির ধান কাটছি।
একই গ্রামের কৃষক আসকর আলী বলেন, আমি জমিতে ২৯ জাতের ধান লাগিয়েছিলাম। তাই ধান পুরোপুরি পাকতে সময় লেগেছে। ধান পাকার আগেই উচু এলাকার পানি নেমে আসার কারনে আমার জমিতে কোমর পানি লেগেছে তাই তলিয়ে যাওয়ার আগেই আমি ধান কাটছি।
উপজেলার খরচার হাওরের কৃষক মঞ্জু বর্মণ বলেন, জমিতে পানি জমে যাওয়ায় শ্রমিকরা ধান কাটতে চায় না। তাই বেশি দামে শ্রমিক নিয়ে জমির ধান কাটাচ্ছি।
শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারি মো. আল আমিন বলেন, হাওর থেকে পানি নদীতে বেশি। এখন রাবার ড্যাম নিচু করে দিলে নদী থেকে হাওরে পানি ডুকবে।
শনিবার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার দাস বলেন, আগাম বন্যার শংকায় কৃষকরা জমি থেকে আধাপাকা ধান কাটছেন, এজন্য তেমন কোন ক্ষতি হবে না।
শনিবার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সফর উদ্দিন বলেন,অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে পানি নেমে আসার কারনে এমন সমস্যা হয়েছে, এমন সমস্যা প্রতিবছর হচ্ছে।
উল্ল্যেখ যে,চলতি মৌসুমে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ১৮২০ হেক্টর বোরো ফসলী জমি আবাদ করা হয়েছে। এসব জমির মধ্যে শনিবার পর্য্যন্ত প্রায় ১৬২০ হেক্টর জমির বোরো ধান ইতিমধ্যে কাটা হয়ে গেছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৬এপ্রিল,২০২০)