‘বেঁচে আছেন’ কিম জং উন
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা কিম জং উন ‘বেঁচে আছেন’ এবং ‘ভালো আছেন’ বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। কিমের মৃত্যুর গুজবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে যখন সরগরম চলছে তখন এমন খবর দিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক উপদেষ্টা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের শীর্ষস্থানীয় কূটনৈতিক উপদেষ্টা মুন চুং-ইন জানান, আমাদের সরকারের অবস্থানটি অত্যন্ত পরিষ্কার যে, কিম জং উন বেঁচে আছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা ভালো।
দক্ষিণ কোরীয়ার এই কূটনীতিক আরও জানান, গত ১৩ এপ্রিল থেকে উন উত্তর কোরিয়ার উয়োনসান এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে তার সন্দেহপ্রবণ কোনো চলাফেরা পরিলক্ষিত হয়নি।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, হংকংয়ের একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন কিমের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করলেও উত্তর কোরিয়া থেকে তা নিশ্চিত করা হয়নি। কিম জং উনকে সর্বশেষ জনসমক্ষে দেখা যায় ১১ এপ্রিল দলের পলিটব্যুরোর এক মিটিংয়ে। তবে ১৫ এপ্রিল দেশের প্রতিষ্ঠাতা ও তার দাদা কিম ইল সুংয়ের জন্মদিনে তাকে অনুপস্থিত দেখা গেছে। এরপরই নানা জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে নিউজউইককে পেন্টাগনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যেসব খবর প্রকাশ পাচ্ছে তার ওপর আমেরিকা অব্যাহতভাবে নজর রেখে চলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ডেইলি এনকে'র অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত ধূমপান, বিষণ্ণতা এবং কাজের চাপের কারণে স্ট্রোক করেছেন কিম জং উন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হেইংসাং জেলার একটি বাগানবাড়িতে তার অস্ত্রপচারের পর চিকিৎসা চলছে। কিমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তার মেডিকেল টিমের অধিকাংশ সদস্যই রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ফিরে এসেছেন। তবে কয়েকজন চিকিৎসক এখনো তার সঙ্গেই অবস্থান করছেন। তবে এই প্রতিবেদনটিকে আলাদাভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন।
এরমধ্যে উত্তর কোরিয়ার ছোট একটি শহরের অবকাশ যাপন কেন্দ্রে কিম জং উনের ব্যক্তিগত একটি ট্রেন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে শনাক্ত করা গেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নজরদারি দল।
৩৮ নর্থ নামের ওই নজরদারি দলের ওয়েবসাইটে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের উয়োনসানের একটি স্টেশনে গত ২১ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত কিমের ট্রেনটি অবস্থান করেছিল। তাদের দাবি, ট্রেনের অবস্থানের মাধ্যমে বোঝা যায় কিম একটি অভিজাত এলাকায় আছেন। তবে এই ট্রেনের উপস্থিতি কিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনও আভাস দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি দল।
কিমকে নিয়ে কেন এই গুঞ্জন?
১৫ এপ্রিল ছিল কিমের দাদার জন্মদিন। এ উপলক্ষে ওই দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন কিম। এটি অনেক বড় বিষয়। কারণ কিমের দাদা উত্তর কোরিয়ার জাতির জনকের জন্মদিন দেশটির জন্য খুব বড় অনুষ্ঠান। কিম জং-উন কখনো এ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেননি। সবার ধারণা, তিনি এ অনুষ্ঠানে থাকবেন না, তা হতেই পারে না। তার এই অনুপস্থিতিই এই গুঞ্জনের জন্ম দেয়।
তবে ১২ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বিমানবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন কিম, এমন খবর সম্প্রচার হয়েছে। বরাবরের মতো শান্ত ও সোম্য রূপেই দেখানো হয় তাকে। অবশ্য এর আগের দিন ১১ এপ্রিল সরকারি এক সভায় যোগ দেন কিম। এরপর তাকে আর দেখা যায়নি।
উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে প্রতিবেদন করা বেশ কঠিন। তাই বেশিরভাগ বিষয় জল্পনা থেকে উঠে আসে। এর মধ্যে গত জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের কারণে সীমান্ত লকডাউন করেছে উত্তর কোরিয়া। এরপর দেশটিতে কী হচ্ছে, তা জানা আরও বেশি দুরূহ হয়ে উঠেছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৭এপ্রিল,২০২০)