এবার ট্রাম্পকে তুলোধুনো করলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রামণ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং সংস্থাটি ক্রমাগত চীনের পক্ষাবলম্বন করে আসছে। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ডব্লিউএইচও’কে দুষছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এই অভিযোগে ইতিমধ্যে ডব্লিউএইচও’র আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এবার ট্রাম্পসহ বিশ্বনেতাদের পাল্টা আঘাত হানলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস।
তার অভিযোগ, ডব্লিউএইচও’র দেওয়া প্রাথমিক সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। আর সে কারণেই এই দেশগুলিকে এখন ভুগতে হচ্ছে।
তিনি দাবি করেন, যে দেশগুলি তাদের করোনা সতর্কবার্তা মেনে চলেছে, তারা অনেক ভালো অবস্থানে আছে।
মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও’র প্রাত্যাহিত বিবৃতিতে সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রোস বলেন, ‘আমরা যখন প্রথম সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম তখনই আমাদের কথা শোনা উচিত ছিল। আমরা অনেক আগেই গোটা বিশ্বকে করোনা রুখতে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। আমরা জানিয়েছিলাম, করোনার উপসর্গ আছে এমন রোগীদের খুঁজে বের করে পরীক্ষা করাতে হবে। ওদের সংস্পর্শে যারা আসছে তাদের সনাক্ত করতে হবে এবং আইসোলেট করতে হবে। কিন্তু আমরা তো শুধু পরামর্শ দিতে পারি। কোনও দেশকে আমাদের পরামর্শ শুনতে বাধ্য করার মতো অধিকার আমাদের নেই। যারা আমাদের কথা তখন শুনেছে, তারা এখন ভাল জায়গায় আছে। যারা শোনেনি তাদের ভুগতে হচ্ছে।’
ডব্লিউএইচও প্রধানের দাবি, তারা গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্বের সব দেশকে সতর্ক করেছিল। জানানো হয়েছিল, করোনা ভাইরাসের ফলে সর্বোচ্চ স্তরের জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন এই সতর্কবার্তা দেয় তখন চীনের বাইরে গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮২ জন।
টেড্রোসের অভিযোগ, অনেক দেশই তখন তার সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছে। আর সেই দেশগুলিকে এখন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
আসলে তিনি নাম না করলেও কারো বুঝতে বাকি থাকে না যে, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লক্ষ্য করেই এই আক্রমণ করেছেন। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ব্যর্থতা আর চীনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব রয়েছেন ট্রাম্প।
ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দেওয়া আর্থিক সাহায্যও বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, টেড্রোসের পদত্যাগের দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযানও শুরু করেছে মার্কিন নাগরিকরা।
করোনা নিয়ে ঘরে বাইরে বেশ চাপের মুখে পড়ে পড়েছিলেন টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। তাই এবার তিনি পালটা আক্রমণের পথে হাঁটলেন।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের মোট ৩১ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৭০৭ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া সেখানে কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ।
আর শুরুর দিকে এই ভাইরাসেকে আমলে নেননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলেছেন। এমনকি করোনার চরম অবস্থার মধ্যেও অর্থনীতির দোহাই দিয়ে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ওপর আরোপিত লকডাউন তুলে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ট্রাম্প। এ সম্পর্কে তিনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও আমলে নিতে রাজি না।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৯এপ্রিল,২০২০)