দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: নামী ক্রিকেটারদের বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার ইতিহাস যথেষ্ট দীর্ঘ। নানা সময়ে নানা কারণে নানান দেশের পরিচিত ক্রিকেটারদের জেলের ভাত খেতে হয়েছে। এই তালিকায় যেমন রয়েছে বাংলাদেশের বেশ কিছু ক্রিকেটার, তেমনি রয়েছে ভারত, পাকিস্তান কিংবা ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার। এসব ক্রিকেটার তাঁদের ক্যারিয়ারে ক্রিকেটীয় কারণে কিংবা অক্রিকেটীয় কারণে কারাবন্দী হয়েছেন। আর এসব ক্রিকেটারের কারাবরণের খবর প্রভাব ফেলেছে তাঁদের ক্রিকেট ক্যারিয়ারেও।

যেসব নামী ক্রিকেটার জেল খেটেছেন নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার চলাকালীন সময়ে, তাঁদের নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।

বিনোদ কাম্বলি (ভারত)

শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে এক স্কুল ম্যাচে জুটির বিশ্ব রেকর্ড গড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। টেন্ডুলকারের প্রিয় বন্ধু তিনি। একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা। এক সময় প্রতিভা দিয়েই ভারতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া। কিন্তু বিনোদ কাম্বলির ক্যারিয়ারটা বন্ধুর মতো হয়নি। নানা সময় পথভ্রষ্ট হয়েছেন। ক্যারিয়ারটাও বড় করতে পারেননি। এই কাম্বলি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জেল খেটেছিলেন ২০১৫ সালের আগস্টে, গৃহপরিচারিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। গৃহপরিচারিকার অভিযোগ ছিল কাম্বলি দম্পতি প্রায়ই তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতো।

শাহাদাত হোসেন (বাংলাদেশ)

গৃহপরিচারিকাকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বাংলাদেশের পেসার শাহদাত হোসেন।

মাখায়া এনটিনি (দক্ষিণ আফ্রিকা)

দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার তিনি। ১৯৯৮ সালে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গুরুতর এক অপরাধের অভিযোগ। ইস্ট লন্ডনের এক তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল ধর্ষণের। অবশ্য সেই অভিযোগটি প্রমাণ করতে না পারার কারণে কমপক্ষে ৬ বছরের কারাদণ্ড থেকে বেঁচে যান এই প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার। যদিও অল্প কিছুদিন জেলে তাঁকে কাটাতেই হয়েছিল।

অমিত মিশ্র (ভারত)

যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক ভারতীয় ক্রিকেটার অমিত মিশ্র।

নভজোৎ সিং সিধু (ভারত)

১৯৮৮ সালে ছোট এক সড়ক দুর্ঘটনা দিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। গুরুমান সিং নামের এক বৃদ্ধ ব্যক্তির সঙ্গে সেই দুর্ঘটনার ফলে ঝগড়া লাগে নভজোৎ সিং সিধুর। তা থেকে মারামারি। সেই ঘটনায় আঘাত পেয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান সেই গুরুমান, গ্রেপ্তার করা হয় সিঁধুকে। হত্যা মামলা দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের জন্য তাঁর ১০ বছরের জেল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনভাবে বেঁচে যান ভারতের এই সাবেক ওপেনার। কথিত আছে, তাঁর তারকাখ্যাতি ও সে সময়কার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে তিনি বেঁচে যান।

ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, আকিব জাভেদ ও মুশতাক আহমেদ (পাকিস্তান)

১৯৯৩ সালে পাকিস্তান দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময়কার ঘটনা। হঠাৎ করেই বিশ্ব মিডিয়ায় খবর গ্রেপ্তার হয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন ওয়াকার ইউনিস, আকিব জাভেদ ও মুশতাক আহমেদ। গ্রেনাডার পুলিশের অভিযোগ ছিল তাদের কাছে অবৈধ মারিজুয়ানা রয়েছে। পরদিনই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, ওয়াসিম–ওয়াকার–আকিব–মুশতাককে সন্দেহের বশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে পরীক্ষা করে দেখা হয়, তাদের কাছে যা ছিল, সেটি মারিজুয়ানা নয়, এমনকি অবৈধ কোনো মাদকদ্রব্যও নয়।

বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)

গত বিশ্বকাপের আগেই ব্রিস্টলের একটি পানশালার বাইরে মারামারি করে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা বেন স্টোকস। তাঁর বিশ্বকাপ খেলাই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল।

রুবেল হোসেন (বাংলাদেশ)

২০১৫ বিশ্বকাপের আগে প্রেমিকার অভিযোগে আটক হয়েছিলেন বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সেই অভিযোগ তুলে নিয়েছিলেন তাঁর প্রেমিকা।

আরাফাত সানি (বাংলাদেশ)

একই ধরনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বাংলাদেশের আরেক বাঁ হাতি স্পিনার আরাফাত সানি।

স্পট ফিক্সিং- আসিফ, আমির, সালমান, শ্রীশান্ত

পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আসিফ, মোহাম্মদ আমির ও ব্যাটসম্যান সালমান বাট কারাভোগ করেছেন স্পট ফিক্সিং কান্ডে। একই অভিযোগে জেল খেটেছেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী পেসার শ্রীশান্ত।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮মে, ২০২০)