করোনার উৎস নিয়ে দোষারোপের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: চীনের হুবেই প্রদেশের উহান দিয়ে শুরু হওয়া বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসে এরইমধ্যে বিশ্বব্যাপী তিন লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। প্রতিদিনই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে এই ভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যাও।
তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলির নেতারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এই ভাইরাসের উৎসের সন্ধানে। এই প্রক্রিয়ায় তোড়জোর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তার অভিযোগের তীর বরাবরই চীনের দিকে। নতুন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি প্রাকৃতিক না কৃত্রিম জানতে ট্রাম্পের তদন্তের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে অন্তত একশটি দেশ।
প্রথমবারের মতো এমন তদন্তের আহ্বানে সাঁয় দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন সেই তদন্ত হতে হবে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আসার পর এবং অবশ্যই ‘বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষভাবে’।
সোমবার জেনেভায় বার্ষিক বৈঠক বসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গভার্নিং বডি ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির’ (ডব্লিউএইচএ)। এই বৈঠকেরই উদ্বোধনী বক্তব্যে একথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অস্ট্রেলিয়া নতুন করোনাভাইরাস তদন্তে যৌথভাবে খসড়া প্রস্তাবনা তুলে ধরে বৈঠকে। জাপান, কানাডা, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল এবং ভারতসহ বহু দেশ সেই প্রস্তাবনায় সমর্থন দিয়েছে। এতে সুনির্দিষ্টভাবে চীনের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
বিশ্বজুড়ে মহামারি হয়ে দেখা দেওয়া নতুন করোনাভাইরাসের জন্য চীনকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মহামারির মধ্যে গত তিন মাসে তিনি একাধিকবার দেশটির দিকেই ছুড়েছেন অভিযোগের তীর।
চীন বরাবরই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে আসছে। এছাড়া সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিজ্ঞানীদের অনেকেও নতুন ধরণের এই করোনাভাইরাসকে প্রাকৃতিক বলেই জানিয়েছেন।
এরপরও তা নিয়ে চলমান সন্দেহ দূর করতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জোরালো আহ্বানের মুখে জেনেভায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট ওই আহ্বানে সমর্থন জানান।
অবশ্য তিনি বিশ্ব নেতাদের এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দূর করা এবং সহযোগিতা করার ওপরই জোর দেওয়া উচিত।
চলতি বছরের শুরু থেকেই বৈশ্বিক মহামারি হয়ে একের পর এক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ধরনের নভেল করোনাভাইরাস। কোভিড-১৯ পোশাকি নাম পাওয়া এই মারণব্যাধির এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন কিংবা কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কার কবা সম্ভব হয়নি।
এই ভাইরাস ঠেকাতে বিভিন্ন দেশের গবেষক-বিজ্ঞানীদের ১১০টিরও বেশি ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও কবে সেসবের সাফল্যও রয়েছে অনিশ্চিত পর্যায়ে। ফলে কবে নাগাদ এই মহামারির লাগাম টানা সম্ভব হবে সেটাও অনেকটা অনিশ্চিত।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯মে, ২০২০)