করোনা মোকাবেলায় জার্মানির সাফল্যের অংশীদার বাংলাদেশের চিকিতসকও
জার্মান প্রতিনিধি: সারাবিশ্ব কোভিড-১৯ ঝরে লন্ডভন্ড। পৃথিবীব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরাজ করছে স্থবিরতা। আর এই ঝরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ আমেরিকা ও ইউরোপ। তবে ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ জার্মানি করোনা মোকাবেলায় দেখাচ্ছে অভূতপূর্ব সাফল্য। আর জার্মানির এই সাফল্যের অংশীদার বাংলাদেশের চিকিতসকরাও।
বাংলাদেশী চিকিতসকরা রাত-দিন জার্মানিরবিভিন্ন প্রদেশের হাসপাতালে ১৮ থেকে ১৯ ঘন্টা পর্যন্ত দায়িত্ব
পালন করছেন। নিবিড় চর্চার মাধ্যমে সারিয়ে তুলছেন রোগীদের। অর্জন করছেন মানুষের ভালোবাসা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন জার্মানদের কাছে।
জার্মানির সরকারি হাসপাতালগুলোতে কতোজন বাংলাদেশী চিকিতসক কাজ করছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই। তবে জার্মানির উত্তরে শ্লেসভিক- হোলস্টাইন প্রদেশের হাসপাতালে চিকিতসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন চট্টগ্রামের ডা. গাফফার আনিসুল আনিস। তিনি সেখানে করোনা রোগীদের চিকিতসা দিয়ে ইতোমধ্যে জয় করেছেন প্রবাসীসহ জার্মানদের হৃদয়।
হাসপাতাল ও প্রবাসী সূত্র জানায়, ডা. আনিস তার পুরো সময় হাসপাতালের রোগীদের দিচ্ছেন। এছাড়া যখনই সময় পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনলাইনে করোনা থেকে বাঁচার নানান উপায় জানিয়ে দিচ্ছেন। এতে করে বাংলাদেশী প্রবাসী যাদের জার্মান ভাষাসংক্রান্ত দূর্বলতার কারণে জার্মান চিকিতসকদের পরামর্শ নিতে সমস্যা হচ্ছিল তারা সেই সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছেন।
প্রবাসীরা ডা. আনিসের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করছেন অকপটে।
ডা. গাফফার আনিসুল আনিস প্রতিবেদককে বলেন, তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের স্কুল ও কলেজে পড়েছেন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে বেশিরভাগ সময় থাকলেও বাঙালি ও বাংলাদেশের মানুষদের তিনি ভুলেন নি। উচ্চ শিক্ষা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজেও কিছুদিন ইন্টার্নি হিসেবে কাজ করেন। পরে সেখান থেকে চলে আসেন জার্মানিতে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার হৃদয়ে। তাই আমার দেশের যখন যে সমস্যা নিয়ে আসে সবাইকে সাধ্যমতো সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করি। আর করোনা মোকাবেলায় জার্মান সরকারের ব্যবস্থা অত্যন্ত চমতকার। আমরা যারা চিকিতসক রয়েছি, আমরা আমাদের সর্বোচ্চটাই দেয়ার চেষ্টা করছি। মানুষের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করার সুযোগ সব সময় আসে না। করোনার এই দু:সময়ে মানুষের জন্য সত্যিই কিছু করতে পেরে নিজের কাছেও ভালো লাগছে।
ডা. আনিস বাংলাদেশীদের কোভিড-১৯ ভাইরাসে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, করোনা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। পর্যাপ্ত ও সঠিক চিকিতসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। তবে, সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমাদের নাক, মুখ কিংবা চোখ দিয়ে আক্রান্ত রোগীর লালা, হাঁচি বা কাশির ড্রপলেট প্রবেশ না করে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছরেই এই ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত- জার্মানিতে আজ পর্যন্ত ১,৮৫,৬৯৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে যাদের মধ্যে প্রায় ১,৭০,০০০ জনই সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৭৬৯ জন।
সাগর আনোয়ার