সংসদে বাজেট পেশ আজ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হবে আজ (বৃহস্পতিবার)। বিকেল ৩টায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের ৪৯তম এবং তার নিজের দ্বিতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন। নতুন এই বাজেটের আকার হতে পারে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শারমীন শিরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট উপস্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সীমিত আকারে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য এবং সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদও এ সময় জাতীয় সংসদে তার অফিস কক্ষে থাকবেন বলে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে ঘাটতির (অনুদানসহ) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। এবারের বাজেটের ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। যা এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
সূত্র জানায়, আসন্ন বাজেটে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে নতুন বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আগামী বছর কর রাজস্ব আহরণ করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত রাজস্ব আহরণ করতে হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ হচ্ছে ৩৩ হাজার ৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে আবর্তক ব্যয় হচ্ছে ৩ লাখ ১১ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। আবর্তক ব্যয়ের অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে ৫৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে ৫ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর বাইরেও সম্পদ সংগ্রহ, ভূমি অধিগ্রহণ, নির্মাণ ও পূর্তকাজ, শেয়ার ও ইক্যুইটিতে বিনিয়োগসহ মূলধনী ব্যয় হবে ৩৬ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। পাশাপাশি ঋণ ও অগ্রিম বাবদ ৪ হাজার ২১০ কোটি টাকা এবং খাদ্য হিসেবে ৫৬৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার অভ্যন্তরীণ খাত থেকে এক লাখ ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেবে। এরমধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি, সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি এবং অন্যান্য ঋণ নেবে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী বছরে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ৫২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট জিডিপি টাকার অঙ্কে ধরা হয়েছিল ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এটি কাটছাঁট করে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, নতুন অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকায় কেনা জমি-ফ্ল্যাট বৈধ করার সুযোগ থাকছে। এজন্য প্রতি বর্গমিটার হিসাবে নির্দিষ্ট অঙ্কের কর দিতে হবে। একই সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে। এছাড়া পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা রোধে বাড়তি করারোপের বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের রফতানিতে উৎসে কর বাড়ানো হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংসদে উপস্থাপনের পরপরই ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের দলিলাদি অর্থমন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে। যে কেউ সেখান থেকে তা ডাইনলোড করে নিতে পারবেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১১জুন, ২০২০)