মাস্ক দুর্নীতি: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ ৩ সংস্থাকে দুদকের চিঠি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মাস্ক ও পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুয়িপমেন্ট (পিপিই) কেনাকাটায় দুর্নীতির অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ ৩ সংস্থার কাছে তথ্য-চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম। রোববার (২১ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংস্থার জনসংযোগ (পরিচালক) কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান টিমের প্রধান মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত এই চিঠি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে তথ্য-রেকর্ডপত্র আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করেছে দুদক টিম।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে যেসব নথি চাওয়া হয়েছে, যেগুলো হলো—মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজার, আইসিইউ যন্ত্রপাতি, ভেন্টিলেটর, পিসিআর মেশিন, কোভিড টেস্ট কিট কেনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নেওয়া প্রকল্পগুলোর নাম, অর্থ বরাদ্দ-ব্যয়ের পরিমাণ ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য।
একই চিঠিতে মেসার্স জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডসহ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। একইসঙ্গে ২৬ মার্চ ২০২০ থেকে এই পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে যেসব ডাক্তারকে বদলি করা হয়েছে, তাদের নাম, পদবি, বর্তমান কর্মস্থল, পূর্ববর্তী কমস্থল, মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালকের কাছেও সংশ্লিষ্ট নথি চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে থেকে এক জরুরি বৈঠকে করোনাকালে এম-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষামূলক সামগ্রী কেনায় অনিয়ম-দুর্নীতি-প্রতারণার অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
এরপর গত ১৫ জুন এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষামূলক সামগ্রী কেনায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ধরতে দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের টিম গঠন করা হয়। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন—উপপরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রথমে স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটার দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এন-৯৫-এর মোড়কে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় মেডিসিন স্টোর ডিপোর (সিএমএসডি) কর্তৃপক্ষ। সিএমএসডি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা এন-৯৫ মাস্কের কোনো কার্যাদেশ জেএমআইকে দেয়নি। পরবর্তী সময়ে ভিডিও কনফারেন্সে দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দুর্নীতি তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি বা প্রতারণার কিছু অভিযোগ দুদকের হটলাইন ১০৬-এ আসে বলে জানা গেছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২১জুন, ২০২০)