দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারত মাঝারি এবং গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসায় স্বল্প মাত্রার স্টেরয়েড ওষুধ ডেক্সামেথাসোন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধিত গাইডলাইনে আলোচিত এই স্টেরয়েড ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

এর আগে, গত মাসে করোনা সংক্রমণের নতুন উপসর্গ হিসেবে স্বাদ ও গন্ধ হারানোকে চিকিৎসা গাইডলাইনে যুক্ত করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৫৫২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৫৩ জনে পৌঁছেছে।

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান পঞ্চম। দেশটিতে সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় তা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে।

গত ১৬ জুন ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পরীক্ষার অংশ হিসেবে- হাসপাতালের প্রায় ২ হাজার করোনা রোগীকে ডেক্সামেথাসোন প্রয়োগ করেন এবং পরে ৪ হাজারের বেশি রোগী যাদের এই ওষুধটি দেয়া হয়নি; তাদের সঙ্গে তুলনা করে দেখেন।

অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা ডেক্সামেথাসোনকে করোনায় প্রথম জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ থেকে ২৮ শতাংশে কমিয়ে আনে ডেক্সামেথাসোন। এছাড়া যেসব রোগীর অক্সিজেন দরকার হয়, তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় ২৫ থেকে ২০ শতাংশ।

গবেষকদের ধারণা, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে দেশটিতে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো যেত। কারণ এটা অনেক স্বস্তা। কোভিড-১৯ এর প্রচুর রোগী নিয়ে লড়াইরত বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর জন্যও বিশাল উপকারে আসতে পারতো ওষুধটি।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের এই গবেষণার ফল প্রকাশের পর ওষুধটির উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধির আহ্বান জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ।

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় তখন এর কিছু ক্ষতি ঠেকাতে সহায়তা করে ডেক্সামেথাসোন। শরীরের প্রদাহ কমিয়ে আনতে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। ১৯৬০ সালের গোড়ার দিক থেকেই বাত, হাপানি ও প্রদাহের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসোন ওষুধটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জোর দিয়ে বলেছে, এই ওষুধটি শুধুমাত্র চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে গুরুতর এবং আশঙ্কাজনক রোগীদের প্রয়োগ করা যেতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৭জুন, ২০২০)