সুস্থ প্রায় ৫৮ লাখ, মৃত্যু ৫ লাখ ১৩ হাজার
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। তবে সুস্থ হয়ে উঠার সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ৫৮ লাখের মতো মানুষ।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের মোট ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫ হাজার ১৫২ জন। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মারা গেছে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৯১৩ জন। তবে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫৭ লাখ ৯৫ হাজার ৯ জন। করোনা থেকে এত মানুষের সুস্থ হয়ে ওঠার এই পরিসংখ্যান আমাদের আশার আলো দেখায়।
২০১৯ এর ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম হামলা হয়েছিল করোনার। চীন থেকে ইরান হয়ে ইউরোপের ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে মরণ কামড় বসিয়েছে করোনা।
ইউরোপকে তছনছ করার মধ্যেই উত্তর আমেরিকায় হামলা শুরু করে করোনা। এই ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ১২২ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৩ জন।
সেখানে সুস্থ হয়েছে মোট ১১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩৪ জন। এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও সাড়ে ১৪ লাখের বেশি মানুষ।
বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের। মঙ্গলবারও সেখানে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১ হাজার ২৭১ জন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৮ হাজার ৪৮৫ জন। আর মোট মারা গেছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।
দেশটিতে এখন অবধি সুস্থ হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার ৪০ জন। এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে সাড়ে ৫ লাখের বেশি মানুষ। দেশটিতে আক্রান্তের তুলনায় সেরে উঠাদের সংখ্যাটা বরাবরই বেশ কম।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করে নেবে দেশটি। করোনা তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে ট্রাম্পের দেশ।
প্রসঙ্গত, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, ডেনমার্ক, চীন ও ইতালির মতো দেশে। অবশ্য শুরু থেকেই তৎপর হওয়ায় করোনা সংক্রমণ অনেক কম হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে। যে কারণে বিশ্বের অন্যান্য করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার মডেল অনুসরণ করার কথা বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট করোনা সংক্রমণের সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ১২ হাজার ৮শ জন। এদের মধ্যে ১১ হাজার ৫৩৭ জনই সেরে উঠেছে। বর্তমানে দেশটিতে অ্যাক্টিভ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৯৮১। সেকানে করোনায় মারাও গেছে অনেক কম মানুষ, ২৮২ জন।
ইউরেপের দেশ ডেনমার্কে আক্রান্ত হয়েছিল ১২ হাজার ৭৬৮ জন। তার মধ্যে ১১ হাজার ৬৪৯ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছে। সেখানে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা মাত্র ৫১৪টি। দেশটিতে মারা গেছে ৬০৫ জন।
ইউরোপের আরেক দেশ জার্মানিতে আক্রান্ত হয়েছে মোট ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩২ জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ৭৯ হাজার ১০০ জনই সুস্থ হয়েছে। মারা গেছেন ৯ হাজার ৫২ জন মানুষ। বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা মাত্র ৭ হাজার ৬৮০ জন।
এছাড়া সুস্থ হওয়ার তালিকায় এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো।
ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হলেও সেখানে সুস্থ হয়ে উঠাদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৭৮ এবং মোট সুস্থ ১ লাখ ৯০ হাজার ২৪৮ জন। বর্তমানে ইতালিতে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা মাত্র ১৫ হাজার ৫৬৩ জন।
একই কথা বলা যায় এশিয়ার দেশ ও করোনার কেন্দ্রস্থল হিসাবে পরিচিত চীনের ক্ষেত্রেও। সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছে মোট ৮৩ হাজারের কিছু বেশি এবং সুস্থতার সংখ্যা ৭৮ হাজার ৪৭৯ জন। বর্তমানে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৪২১ জন। এদের বেশিরভাগই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে। গত মঙ্গলবারও সেখানে আরও তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর করোনা আক্রান্ত তালিকার উপরের দিকে থাকা দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে রাশিয়া (আক্রান্ত ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৮৪৯ ও মৃত্যু ৯ হাজার ৩২০), ভারত (আক্রান্ত ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯২ ও মৃত্যু ১৭ হাজার ৪১০) ও যুক্তরাজ্য (আক্রান্ত ৩ লাখ ১২ হাজার ৬৫৪ ও মৃত্যু ৪৩ হাজার ৭৩০ জন)।
সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০১ জুলাই, ২০২০)