এক লাখ কোটি টাকা আমানতের মাইলফলক ইসলামী ব্যাংকের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এখন এক লাখ কোটি টাকা আমানতের ব্যাংক। ৩০ জুন এ মাইলফলক অতিক্রম করেছে দেশের শীর্ষ এই বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। ২০১৯ সালে ব্যাংকটির আমানত ছিল ৯৪৬৮১ কোটি টাকা, ২০১৮ সালে ৮২২৫৭ কোটি, ২০১৭ সালে ৭৫৫০২ কোটি এবং ২০১৬ সালে ছিল ৬৮১৩৫ কোটি টাকা।
আমানতের পাশাপাশি এ বছরের মে ও জুন মাসে অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে সর্বোচ্চ বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরণ করেছে ইসলামী ব্যাংক। যার পরিমাণ মে মাসে ৪৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং জুন মাসে ৫৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগে কখনও রেমিট্যান্স আহরণ ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেনি।
রেমিট্যান্স আহরণে ২০১৯ সালের জুন মাসের তুলনায় ২০২০ সালের জুন মাসে ইসলামী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১১৬ শতাংশ। বর্তমানে রেমিট্যান্স আহরণে ইসলামী ব্যাংকের মার্কেট শেয়ার ৩২ শতাংশ। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়িয়ে জাতীয় রিজার্ভে (বিদেশি মুদ্রার মজুদ) উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এই ব্যাংক।
ইসলামী ব্যাংক দেশের সুষম উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সার্বিক অবদানের পাশাপাশি অনগ্রসর ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়তে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিপালনের সংস্কৃতি লালন করা ও যথাযথ পেশাদারিত্বের সঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে জনগণের সঞ্চয়ের বিশ্বস্ত আমানতদার হিসেবে কাজ করছে এই ব্যাংক।
শরীআহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের অগ্রপথিক ইসলামী ব্যাংক বর্তমানে ৩৫৭টি শাখা, ৪৩টি উপশাখা, ১২০০ এজেন্ট আউটলেট এবং ৬৬০টি নিজস্ব ও প্রায় ১১ হাজার শেয়ারড এটিএম, সিআরএম বুথের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা প্রদান করছে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিসমৃদ্ধ ও আন্তরিক গ্রাহক সেবার মাধ্যমে এই ব্যাংক শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের অনন্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। চলতি বছরে ব্যাংকটির গ্রাহকসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা দেড় কোটি।
আর্থিক সেবা বঞ্চিত মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছাতে ইসলামী ব্যাংক ২০১৭ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেটগুলোর গ্রাহক সংখ্যা ৭ লাখ ৫৩ হাজার এবং আমানতের পরিমাণ দেশের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সর্বোচ্চ ২৬০০ কোটি টাকা।
দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ইসলামী ব্যাংক অতীতের মতই শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। যা চলমান আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সময়ে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাম ও শহরের অর্থনৈতিক বৈষম্য কমিয়ে এবং বণ্টনমূলক সুবিচার নীতি অনুসরণ করে বিনিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক দেশের টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে সর্বোচ্চ এসএমই বিনিয়োগ যা এসএমই সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
তারুণ্যদীপ্ত, সৎ, যোগ্য ও চৌকস নারী-পুরুষের সমন্বয়ে গঠিত এক দল পেশাদার কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এই ব্যাংক। সৎ, আত্মবিশ্বাসী ও গ্রাহকসেবায় সদাপ্রস্তুত কর্মী বাহিনীই এই ব্যাংকের বড় সম্পদ। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ পর্যন্ত অসংখ্য পদক পেয়েছে এ ব্যাংক। বিশ্বের শীর্ষ এক হাজার ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক।
ব্যাংকের এই সাফল্যের কৃতিত্ব দেশ ও প্রবাসের সব গ্রাহক, শুভাকাঙ্খী ও ইসলামী ব্যাংক পরিবারের সব সদস্যের। স্থানীয় মালিকানা পরিবর্তনের কারণে ব্যাংকের গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে সর্বত্র। সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০১ জুলাই, ২০২০)