রামোসের গোলে শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে রিয়াল
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: গেটাফেকে হারাতে পারলেই বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে যেত রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের বেশিরভাগ সময় অবশ্য গেটাফে বার্সার আশার পালে হাওয়া দিচ্ছিল। সবকিছু উধাও হয়ে গেছে এক মুহুর্তে। নির্ধারিত সময়ের ১১ মিনিট বাকি থাকতে সার্জিও রামোস পেনাল্টি থেকে গোল করে হুট করে জেঁকে বসা অস্বস্তি দূর করেছেন। আরও এক জয়ে তাই শিরোপার পথে বড় এক ধাপ পা রাখলো জিনেদিন জিদানের দল। লা লিগায় বাকি আর ৫ ম্যাচ, রিয়াল মাদ্রিদ বার্সার চেয়ে এগিয়ে গেল ৪ পয়েন্টে।
গেটাফের শক্ত রক্ষণ ভাঙতে পুরো ম্যাচেই ঘাম ঝরাতে হয়েছে রিয়ালকে। দানি কারভাহালের দূরন্ত গতির কাছে শেষ পর্যন্ত হার মেনেছে গেটাফে। ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন রিয়াল ফুলব্যাক। ম্যাথিয়াস অলিভিয়েরা বক্সের ভেতর ফাউল করেছিলেন তাকে। এরপর বাকি কাজটা সেরেছেন রিয়ালের ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক’। ঠান্ডা মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছিলেন রামোস।
এর আগে প্রথমার্ধে অবশ্য এই অলিভিয়েরা-কারভাহাল লড়াই আরেকটি পেনাল্টি দেখতে পারত। তখন অবশ্য ঘটনা ঘটেছিল রিয়ালের বক্সের ভেতর। অলিভিয়েরা বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন, কারভাহাল তাকে বাধা দিতে গিয়ে বলে টাচ না করে আঘাত করেছিলেন পায়ে। রেফারির কাছে অবশ্য পেনাল্টি দেওয়ার জন্য ওইটুকু কন্টাক্ট যথেষ্ট মনে হয়নি।
আলফ্রেড ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমে অবশ্য ম্যাচে উত্তাপ ছড়িয়েছে বেশ কয়েকবার। প্রথমার্ধে দুই গোলরক্ষককেই দারুণ সেভ করতে হয়েছে। গেটাফের সেট পিস থেকে হাবিয়ের এতশেইতার উরুতে লেগে একেবারে শুরুর দিকে বল ঢুকে যেতে পারত রিয়ালের জালে। কোর্তোয়া দারুণ এক সেভে তখন বাঁচিয়েছেন রিয়ালকে।
এডেন হ্যাজার্ডকে গেটাফের বিপক্ষে বিশ্রামে রেখেছিলেন জিদান। করিম বেনজেমা, ভিনিসিয়াস জুনিয়রের সঙ্গে নেমেছিলেন ইস্কো। পরের দুইজনই গোল পেতে পেতেও পাননি ডেভিড সোরিয়ার দারুণ দুই সেভে। বাম প্রান্ত থেকে ফার্লন্ড মেন্ডির নিচু ক্রস স্লাইড করে পা ছোঁয়ানোর পর ভিনিসিয়াসকে দুর্দান্ত সেভে আটকে দিয়েছিলেন সোরিয়া। পরেরবার কাছের পোস্টে ইস্কোর প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন গেটাফে গোলরক্ষক।
গেটাফের গোছালো রক্ষণ আর মিডফিল্ড প্রথমার্ধে রিয়াল ভালোই চাপে রেখেছিল। বিশেষ করে অ্যাটাকিং থার্ডে গেটাফের প্রেসিংও ছিল দারুণ। তাই প্রথমার্ধে গেটাফের চেয়ে বরং রিয়ালের বক্সের সামনেই বল ঘুরেছে বেশি। আর রিয়ালও সেদিক থেকে কিছুটা রঙহীনই ছিল বিরতির আগ পর্যন্ত।
এর ভেতর রাফায়েল ভারান হেড করতে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে ৩৩ মিনিটেই মাঠ ছাড়েন। রামোসও এর আগেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে লুকা মদ্রিচ অবশ্য ডেডলক ভাঙতে পারতেন। তবে তার নিচু শট গেটাফে ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বারপোস্টের ঠিক পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। বিরতির পর ম্যাচের ভাগ্য ঘুরেছে আসলে জিদানের তিন বদলিতে। ফেদেরিকো ভালভার্দে, মার্কো আসেনিসিও, রদ্রিগোকে নামিয়ে জিদান তুলে নেন মদ্রিচ, ভিনিসিয়াস আর ইস্কোকে। তাতে আক্রমণে ধার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গতিও বাড়ে রিয়ালের। গেটাফেও এরপর আর চোখ তুলে তাকাতে পারেনি রিয়ালের দিকে।
বেনজেমা এদিন খুব বেশি আলো ছড়াতে না পারলেও তার অবদানও কম নয়। গেটাফের ডিফেন্স লাইনের পেছনের জায়গাটা দেখেছিলেন তিনি। কারভাহালকেও পাসটা বাড়িয়েছিলেন বেনজেমাই। আর রামোস এরপর টানা ২১ তম পেনাল্টিও নিয়েছেন সফলভাবে। লা লিগা গত মাসে আবার ফেরার পর ৬ ম্যাচে এই নিয়ে ৪ গোল করলেন রামোস। সেটা শিরোপার পথে রিয়ালকে কতোদূর এগিয়ে দিল তার প্রমাণ মিলবে মৌসুম শেষে। তবে আপাতত, কিছুটা নির্ভারই থাকতে পারে রিয়াল। শিরোপা তো এখান থেকেই দেখতে পাওয়ার কথা তাদের!
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৩জুলাই, ২০২০)