কারাগারে বসেই ওয়ালটন শোরুমে ডাকাতির পরিকল্পনা: ডিসি হারুন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিভিন্ন সময় চুরি-ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর পরিচয় তাদের। সেখানে বসেই বড় কোনও শোরুমে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। পরে জেল থেকে বেরিয়ে রাজধানীর পান্থপথের ওয়ালটন শোরুমে ডাকাতি করে তারা। এমনটাই জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ।
রোববার (০৫ জুলাই) দুপুরে শেরেবাংলা নগর থানার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিসি হারুন ।
গত ২৩ জুন মধ্যরাতে পান্থপথের ওয়ালটন প্লাজা শোরুমে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওয়ালটন শোরুম টিম ম্যানেজার রানা মিয়া পরেরদিন শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্তের ভিত্তিতে, ঢাকার বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতিতে অংশ নেওয়া ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- রবিউল ইসলাম, সুমন, রানা ও সাথী। এদের মধ্যে রবিউল ইসলাম ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ডিসি হারুন বলেন, মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪টি ওয়ালটন ফ্রিজ, ৫টি এলইডি টেলিভিশন, একটি মোবাইল ফোন এবং ড্রাইভারের সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং হেলপারের কাছে থাকা ৮০০ টাকা নিয়ে যায় ডাকাতরা। যার দাম ৬ লাখ টাকার ও বেশি। এর মধ্যে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেপ্তার এবং ১৮টি ওয়ালটন ফ্রিজ এবং তিনটি এলইডি টেলিভিশন উদ্ধার করে।
ডাকাতির বিবরণ সম্পর্কে ডিসি বলেন, পান্থপথ ওয়ালটন প্লাজার মালামাল কিশোরগঞ্জ জেলার ডিলারের কাছে (রহমত ইলেকট্রনিকস) পৌঁছানোর উদ্দেশে ওয়ালটন কোম্পানির নিজস্ব পরিবহনে করে (ঢাকা মেট্রো ড-১১-৭০-৩৫) শোরুমের কর্মচারী জিহাদ হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, মো. তারেক হোসেন মারফত মালামাল ওঠানো হয় এবং পণ্যের চালান কপি ড্রাইভার আনোয়ার হোসেন এবং হেলপার মিরাজের কাছে হস্তান্তর করে শোরুম কর্মচারীরা এলাকা থেকে চলে যায়।
এরপর খালি পিকআপে ৭-৮ জন এসে চাপাতির ভয় দেখিয়ে ওয়ালটন কোম্পানির গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপারদের গাড়িতে ওঠায় এবং বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নামিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র শীল।
ডিসি হারুন বলেন, মামলার ঘটনার তেমন কোনো ক্লু না থাকায় তদন্ত দলের তদন্ত শুরু করতে হয় বড় পরিসরে। প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরার সহায়তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ভিডিও ফুটেজ যাচাই-বাছাইসহ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ জুলাই রবিউল ইসলামকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তদন্ত টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকা থেকে আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান ডিসি হারুন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৫জুলাই, ২০২০)