সহিংসতা গণতন্ত্রের ভাষা নয় : সিইসি
দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলকে সমঝোতার পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার(সিইসি)কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ। নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে রবিবার দুপুরে এক বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এ আহ্বান জানান তিনি।
কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সহিংসতা কেউ চাই না। সহিংসতা গণতন্ত্রের ভাষা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কারো দিকে তাকিয়ে নেই। যথাসময়ের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর জন্য কমিশন প্রস্তুত আছে।’
একটি দলের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হচ্ছেন, অপরদিকে আরেকটি দল মনোনয়নের আবেদনপত্র বিক্রি করছে- এ পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের আহবান কি সেটা আমরা আগেও বলেছি। দেশবাসী চায় একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। সহিংসতা কেউ চায় না। এটা গণতন্ত্রের ভাষাও নয়। তার জন্য সবার কাছে আমার আবেদন, সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। সকল পক্ষর যত্নবান হতে হবে। যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে চলতে পারে।’
জনগণের ইচ্ছাপূর্ণ করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানান সিইসি।
তিনি বলেন, ‘দুই দলের, দুইজোটের বা একাধিক জোটের আলোচনা কিংবা সংলাপ- এটার মধ্যে আমাদের জড়িত হওয়ার কথা নয়। আইন আমাদের সে অধিকার দেয়নি। আইন আমাদের নির্বাচন পরিচালনার অধিকার দিয়েছে। এখন রাজনৈতিক পরিবেশ, দুই দলের মধ্যে সমঝোতা করা ও সহিংসতা না করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমঝোতায় পৌছানো- এটা রাজনৈতিক দলের কাছে আমার প্রত্যাশা।’
কোন সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন এ প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এ ব্যাপারে কোনো ভালো সিদ্ধান্ত হলে আমরা ওয়েলকাম করবো।’
তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি যে তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা অন্য বিষয়ও এনফোর্স করবো। কারো দিকে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই। এটা আইন মোতাবেক হতে হবে। এটা একটা কাট অফ ডেড আছে। সেই মোতাবেক আমরা করছি। তার জন্য সময় আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৪৫ দিন হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করা হয়। সংবিধান অনুযায়ী ৯০দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। দুই দিন আগে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এসে পৌছছে। এখন নির্বাচনের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি।’
এছাড়া আগামী নির্বাচনে কারা রিটার্নিং অফিসার হবেন তা তফসিল ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ।
আচরণবিধির বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধির খসড়া প্রস্তাবনা কমিশনের ওয়েবসাইটে এক সপ্তাহ আগে উম্মুক্ত করা হয়। আমরা এগুলো সম্পর্কে সুপারিশ এবং বিভিন্ন রকমের মন্তব্য পেয়েছি। কিন্তু অনেক ভালো মতামতও এসেছে যা আচরণবিধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই সেগুলো আমরা অন্য কোন আইনে সন্নিবেশিত করা যায় কিনা তা ভেবে দেখছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা হয়েছে উচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এবং তা কার্যকর হয়ে গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত স্টে-অর্ডার না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত রায় বহাল থাকবে।’
তবে বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের আপিল বিভাগে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘সেখানে যদি রায় স্থগিত না করে তাহলে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
নির্বাচনী ম্যানুয়াল চুড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘এর মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, আচরণবিধি ও অন্যান্য সংশোধিত আরপিও অন্তর্ভুক্ত হবে।’
(দিরিপোর্ট/এমএস/এইচএস/এমডি/নভেম্বর ১০, ২০১৩)