শেয়ারবাজারে ফিরল সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। এতেই প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ফিরে এসেছে শেয়ারবাজারে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে বাজারে এ টাকা ফিরেছে।
বড় অঙ্কের অর্থ ফেরার সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সবকটি মূল্য সূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে তার সাতগুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে।
অবশ্য আগের কয়েক সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও লেনদেনে অংশ নেয়া অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত থাকে। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২২টির। আর ১৯৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ২২৫ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৭৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহ ধরে প্রধান মূল্য সূচক বেড়ে চলেছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি টানা তিন সপ্তাহ বেড়েছে ডিএসইর বাকি দুটি সূচকও। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ গত সপ্তাহে বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে বাড়ে দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। আর ডিএসই-৩০ বেড়েছে ২৯ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট।
এদিকে, আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৮৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৮৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৬৪৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বা ৭৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৯৪০ কোটি ৫৬১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৩৩৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে হাজার ২ হাজার ৩৯৩ কোটি ৫২০ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন উল্লম্ফন হওয়ার প্রধান কারণ ডিএসইর ব্লক মার্কেটের মাধ্যমে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের এক কোটি ৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৪টি শেয়ার লেনদেন হয়। যার মূল্য ২ হাজার ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৪টি শেয়ার ২ হাজার ৪৬ টাকা ৩০ পয়সা করে ইউনিলিভার তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কিনে নেয়।
এদিকে, গত সপ্তাহে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান কিছুটা কমেছে। মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮৭ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৯৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
‘এ’ গ্রুপের অবদান কমায় বেড়েছে মাঝারি মানের প্রতিষ্ঠান বা ‘বি’ গ্রুপের অবদান। গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ ছিল বি গ্রুপের দখলে, যা আগের সপ্তাহে ছিল দশমিক ৬৫ শতাংশ। এছাড়া গত সপ্তাহের মোট লেনদেনে ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ অবদান ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ওয়াটা কেমিক্যাল, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো এবং এক্সিম ব্যাংক।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১০জুলাই, ২০২০)