সর্বোচ্চ আক্রান্তের দিনে মৃত ৫৩১০ জন
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপ থামছেই না। এখনো সারা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও দুই লাখ ৩৬ হাজার ২৭৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এছাড়া একই সময়ে মারা গেছেন ৫৩১০ জন।
চলতি মাসের শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণে হঠাৎ দ্রুত ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। জুলাইয়ের প্রথম ১১ দিনের মধ্যে সাতদিনেই দৈনিক নতুন রোগী শনাক্তের হার ২ লাখ ছাড়িয়েছে। বাকি চারদিন ছিল ২ কিছুটা নিচে। তবে গড় হিসাব করলে প্রতিদিন আক্রান্ত হয়েছে অন্তত দুই লাখ মানুষ।
অথচ জুলাই মাসেও করোনার গড় সংক্রমণের হার ছিল দেড় লাখের নিচে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে, বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতির দিনে দিনে অবনতি ঘটছে। আরও দ্রুত বিস্তার ঘটাচ্ছে মহামারি এই ভাইরাস। তাই বিশ্বের সরকারগুলোকে করোনা প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
করোনা নিয়ে আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে যে দুই লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে কয়েকটি দেশে। এর মধ্যে রয়েছে শীর্ষ সংক্রমিত তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল এবং ভারত। তালিকায় আরেকটি নাম হলো দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানেও সংক্রমণ বাড়ছে খুব দ্রুতই।
ওয়ার্ল্ড ও মিটারের তথ্যমতে বিশ্বব্যাপী করোনা শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি সাড়ে ২৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২৬ লাখ ২৩ হাজার ৬৯৮ জন। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৬২ হাজার ৭০৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৭৪ জন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৮ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ। এর আগে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮২৫ জন আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছিল। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারা গেছেন ৫৩১০ জন। আর একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৫ জন।
চীনের উহানে করোনা সংক্রমণ সৃষ্টি হলেও এখন অদৃশ্য এই ভাইরাসটির বেশি প্রকোপ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায়। ইউরোপের কিছু দেশেও ফের ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়েছে। নতুন করে আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে চীন-জাপানেও। ফলে দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, অনেকে দেশে করোনার সংক্রমণের মাত্রা মারাত্মক ঊর্ধ্বমুখী। তাই করোনা প্রতিরোধের পদক্ষেপ দ্বিগুণ করতে হবে।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৬ জন। যুক্তরাষ্ট্রে করোনার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৭১ জনের। করোনায় মোট মৃতের দিক থেকেও প্রথমে রয়েছে দেশটি। দেশটিতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৯৫ জন।
করোনায় আক্রান্তের থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ০৪ হাজার ৩৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৭০ হাজার ৫২৪ জনের। আর এ পর্যন্ত ব্রাজিলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৯৬ জন।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে রাশিয়াকে টপকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসা ভারতে মোট ৮ লাখ ২২ হাজার ৬০৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ১৪৪ জনের এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১৬ হাজার ২০৬ জন।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ১৩ হাজার ৯৩৬ জন। আর করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ১৭ জনের।
সংক্রমণ বাড়ছে বাংলাদেশেও। ১৭ নম্বর অবস্থানে থাকা বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২৭৫ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮৬ হাজার ৪০৬ জন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১১জুলাই, ২০২০)