'এবারের রেকর্ড পরিমাণ রিজার্ভ দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক'
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রেকর্ড পরিমাণ রিজার্ভ নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবছর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কেবল জুন মাসেই প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৮৩ কোটি ডলার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশাল রিজার্ভ সার্বিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। যা আমদানি ব্যয় মেটানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিকে স্বাভাবিক রাখা, বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানো ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত দেশের সার্বিক অর্থনীতি। এর মধ্যে সুখবর বেড়েছে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স। এক মাসের ব্যবধানে ইতিহাসের রেকর্ড ১৮৩ কোটি ডলার বেড়ে তিন হাজার ৬০০ কোটি ডলার রিজার্ভের মাইল ফলক ছুঁয়েছে। গেল বছরের তুলনায় যা ১১ শতাংশ বেশি।
এ বিষয়ে বিআইডিসিএস'র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সরকার বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থের ওপরে ২ শতাংশ একটা ভর্তুকি দিয়েছিল। এটা বৈধপথে টাকা পাঠানো উৎসাহিত করেছে। এছাড়া অনেক প্রবাসী করোনার সময় দেশে ফিরেছেন। হয়তো তারা জমানো অর্থ দেশে নিয়ে এসেছেন।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন রিজার্ভ আমদানি খরচ মেটানোর পাশাপাশি অর্থনীতিকে স্বস্তি দেবে।
পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিকোণ থেকে উচ্চ রিজার্ভ কিন্তু একটা কমফোর্টেবল জিনিস। তারা মনে করেন যে রিজার্ভ তারা বাংলাদেশে করবেন তাদের রিজার্ভ লেভেল ভালো থাকলে বিনিয়োগকৃত অর্থ লাভ সহকারে ফেরত নিতে পারবেন।
অন্যদিকে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য, এবার রিজার্ভ থেকে ঋণ নিতে চায় সরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনটি হলে তা যেমন বাজেটের জন্য ইতিবাচক হবে। অন্যদিকে বিদেশী ঋণের বোঝাও কমবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ জনগণের পক্ষে টাকা সংরক্ষণ করেছে। ওখান থেকে আমরা যদি ঋণ নিতে পারি ভালো হবে।
সানেম এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, সরকারি প্রকল্পগুলোতে আমরা রিজার্ভের যতটুকু ব্যবহার করতে চাই, খুব সতর্কভাবে ব্যবহার করতে হবে। এটা যেন অপব্যবহার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর প্রাতিষ্ঠানিক অদক্ষতার কারণে যে জায়গাগুলোতে অতিরিক্ত খরচ হয়, সেই বিষয়ে যেন রিজার্ভের টাকা ব্যবহার না হয় সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। অনেক লুকানো খরচ আছে, তাও দেখতে হবে। দেশের সরকারি উদ্যোগগুলো চলমান রাখতে হবে।
তবে, রিজার্ভকে টেকসই করতে, প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারকে এগিয়ে আসার তাগিদ দিলেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনায় কাজ হারিয়ে দেশে ফেরা প্রবাসী শ্রমিকদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি তাদের দক্ষতা কাজে লাগাতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১১জুলাই, ২০২০)