আবারও রিমান্ডে সাবরিনার স্বামী আরিফ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর স্বামী আরিফ চৌধুরীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আরিফের সহযোগী সাঈদেরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বুধবার (১৫ জুলাই) কারাগার থেকে ভার্চুয়াল আদালতে তাদের উপস্থিত দেখানো হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুনানি শেষে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ২৪ জুন আরিফ চৌধুরী ও সাঈদ চৌধুরীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। ২৩ জুন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিমানবন্দর, আশকোনা ও গুলশান-২ এর কনফিডেন্স টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
এদিকে, জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফকে তিন দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে চার দিনের রিমান্ড চেয়েছিল পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত রোববার দুপুরে আলোচিত চিকিৎসক সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ডা. সাবরিনাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। রোববার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, আরিফের চতুর্থ স্ত্রী সাবরিনা। তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী রাশিয়া ও লন্ডনে থাকেন। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তালাক হয়েছে। চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনার কারণেই করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পায় জেকেজি হেলথকেয়ার। প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার অন্য এলাকা এবং অনেক জেলা থেকেও নমুনা সংগ্রহ করছিলেন তারা।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির এ চক্রের মূলহোতা। তানজিনা পাটোয়ারী তার স্ত্রী। তাদের নেতৃত্বে চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে করোনার পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করত এবং ভুয়া রিপোর্ট দিত। চক্রটি জনপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিত।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, আটককৃতরা করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে দেন। তবে নমুনা সংগ্রহের পর তা আর পরীক্ষা করা হয় না। তাদের নেই কোনো ল্যাব। কম্পিউটারে ফলাফল লিখে ই-মেইলে তা রোগীর কাছে পাঠিয়ে দেন। এভাবে ইতোমধ্যে ৩৭ জনের ভুয়া কোভিড-১৯ টেস্ট রিপোর্ট জানিয়ে দেন তারা।
নমুনা সংগ্রহের সময় রোগীর বাহ্যিক উপসর্গ দেখে একটা ধারণা থেকে ফলাফল তৈরি করেন। করোনার বাহ্যিক উপসর্গ দেখা দিলে, সেক্ষেত্রে তার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ উল্লেখ করা হয়। কোনো উপসর্গ না দেখা দিলে তার রিপোর্টে নেগেটিভ উল্লেখ করা হয়।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৫জুলাই, ২০২০)