দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: একটা সময় বলা হত, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যায় না। এটাকে কথার কথা বলা হয়ে থাকে। কারণ ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এতো বিশাল যে, সেখানে সূর্য অস্ত যায় না। যেই ভারতীয় উপমহাদেশ তারা এক সময় শাসন করেছিলো। আজ সেই উপমহাদেশেরই ঋষি সুনক ব্রিটিশদের অর্থমন্ত্রী। মাত্র ৩৯ বৎসর বয়সেই বিশের পঞ্চম অর্থনীতির দেশটির অর্থমন্ত্রী তিনি। গত বছরের জুলাই থেকে তিনি অর্থমন্ত্রীর অধীন ‘চিফ সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি’র দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর পরেই দ্বিতীয় ক্ষমতাধর হিসেবেই ধরা হয় অর্থমন্ত্রীকে। সুনক এখন পরিচিত ‘চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার’ হিসেবে।

পড়াশোনা
ঋষি সুনক ইংল্যান্ডের উইনচেস্টার কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবনে তুখোড় মেধাবী ঋষি রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেইসাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ-ও সম্পন্ন করেন তিনি। এসব তো গেল কৃতিত্বপূর্ণ ছাত্রজীবন নিয়ে। কিছুদিন চাকরিও করেছিলেন তিনি। রাজনীতিতে আসার আগে গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর মতো সংস্থায় চাকরি করেন ঋষি। অবশ্য পরে নিজের একটা প্রতিষ্ঠান শুরু করেন। আর এভাবেই চাকরি জীবনের ইতি টেনে নিলেন।

পারিবারিক জীবন
ঋষি সুনকের পারিবারিক জীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। যতদূর জানা যায়, অনেক আগে সুনকের পূর্বপুরুষরা পাঞ্জাব থেকে পূর্ব আফ্রিকায় চলে যায়। পরে সেখান থেকে ব্রিটেনে গিয়ে বসবাস শুরু করে। খুব সম্ভবত জীবিকার সন্ধানেই এভাবে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে ছুটে বেরিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে ২০০৯ সালে নারায়ণমূর্তি ও সুধামূর্তির মেয়ে অক্ষতাকে বিয়ে করেন ঋষি। সুনকের বাবা ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। আর তার মা ফার্মাসিস্ট। আর তার শ্বশুর নারায়ণমূর্তি হলেন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিস এর প্রতিষ্ঠাতা।

রাজনৈতিক জীবন
রাজনৈতিক জীবনে ২০১৫ সালে ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ড কেন্দ্র থেকে প্রথমবারের মতো সাংসদ হন ঋষি সুনক। থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি ‘লোকাল গভর্নমেন্ট’-এর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর গুরুত্ব আরও বাড়ে। এরপর সরাসরি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে। বর্তমানে অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টিতেও ঋষি সুনক জনপ্রিয় মুখ। তরুণ প্রজন্মের নেতা হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সেইসাথে সরকারি মুখপাত্র হিসেবে টিভি-রেডিয়ো সাক্ষাৎকারে তাঁকেই পাঠান বরিস জনসন। ফলে ব্রিটেনের আম জনতার মধ্যেও তিনি অতি পরিচিত মুখ। প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম আস্থাভাজনও ছিলেন তিনি। গত বছরের জুলাইয়ে যখন সুনককে ট্রেজারির চিফ সেক্রেটারি করা হয়। তখন কনজারভেটিভ পার্টির ওয়েবসাইটে তাঁকে ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৬জুলাই, ২০২০)